রনি ইমরান
মানুষ জানে তবে মানেনা এটাই হলো সমস্যা। মানুষকে সচেতন হয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে তা না হলে সামনে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে এবং তা দীর্ঘ হতে পারে বলে মনে করেন জেলা ডেপুটি সিভিল ডাক্তার সার্জন কে এম আবু জাফর।
পাবনার সহ গোটা দেশেই এখন চলছে করোনার সর্বোচ্চ পিক। তিনি মনে করেন,সামাজিক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। তবে মানুষ এখনো উদাসীন। একটু তো ভাবতে হবে যে, এখন করোনার সময়কাল।এখন আমাদের ভালো থাকা আমাদের হাতেই তাই সকলকে সচেতনার সাথে এই দূর্যোগ পাড়ি দিতে হবে।
তারাতাড়িই যাচ্ছেনা করোনা যেতে সময় লাগবে তাই আমাদের উচিত হবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা। যেমন সবসময় মুখে মাস্ক থাকতে হবে। হাঁচি কাশি দেওয়ার সময় ভাইরাস যেন না ছড়ায় খেয়াল রাখতে হবে। দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। চোখা মুখে নাকে হাত দেওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। একটু পর পর হাত ধুতে হবে এবং জরুরি কাজ ছাড়া বাহিরে বের হওয়া যাবেনা। পরিবারে কেউ আক্রান্ত হলে সেখানেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে বলছিলেন, ডেপুটি সিভিল সার্জন।
একদিন আগে পাবনায় সর্বোচ্চ ১৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এই নিয়ে মোট রোগীর সংক্ষা ৪৯ জন। এর মধ্যে এখনো ৫ শত থেকে ৬ শত টেস্ট আসার অপেক্ষায় আছে। যা আসলে রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে চিত্রটাই পাল্টে যেতে পারে।
পাবনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক বিবৃতি’র প্রকাশক ও সম্পাদক ইয়াসির আলী মৃধা রতন, তিনি বলেন প্রতিদিন খুব শঙ্কায় থাকি এই করোনাকালীন সময়ে। আমি সচেতন থাকার চেষ্টা করি কিন্তু মানুষের অসচেতন ভাব কতদিন করোনা থেকে নিরাপদ থাকবো যানিনা। আমি বাইরে গেলে মাস্ক পড়ি কারো সাথে কথা বললে নিদিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখি। কিন্তু অনেক সময় হয়ে ওঠে না হয়তো কেউ কাছেই চলে আসে অবশেষে তাকে বারণ করতে হয় সকলে ভালোর স্বার্থে। আমি যখন বাসায় ঢুকি তখন কাপড়চোপড় খুলে সর্তকতা সাথে আলাদা জায়গায়তে রাখি এবং বাজারের শাকসবজি গরম পানিতে ধুয়ে নিতে বলি। আমাদের আরো সচেতন হতে হবে।
পাবনা রিপোটার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলা বলেন, আমারা এক কঠিন সময় পাড়ি দিচ্ছি,আমরা সচেতন হলেই নিরাপদ থাকবো। তাই স্বাস্থ্যবিধি গুলা মেনে চলতে হবে।
পাবনায় করোনা জয় করে ৮ জন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। পাবানায় টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে প্রতিদিন গড়ে ৭০-৭৫ টি টেস্ট করা হচ্ছে। আগে ছিল ৪০-৪৫ টা। সামনের দিনগুলা ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে যদি আমরা সচেতন না হই।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী বাসায় যেসব স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলা হয়েছে, সেগুলো হলো—
- বাড়িতে থার্মোমিটার, মাস্ক, জীবাণুনাশক এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংরক্ষণ করুন;
- পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করুন। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে;
- পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের জন্য জানালা সবসময় বা অন্তত ২০ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য দিনে দুই-তিন বার খুলে দিয়ে বাড়ির ভেতরে বায়ু চলাচল অব্যাহত রাখুন;
- জীবাণুনাশক দ্বারা বাড়ি ও এর আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন;
- পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একটি তোয়ালে সবাই মিলে ব্যবহার করবেন না। ঘন ঘন কাপড় ও লেপ-তোষক রোদে দিন; ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন। যত্রতত্র থু থু ফেলবেন না, মুখ ও নাক টিস্যুতে মুড়িয়ে বা কনুইয়ের ভাঁজে রেখে হাঁচি-কাশি দিন;
- সঠিক পরিমাণে ও নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। একটি বৈজ্ঞানিক ডায়েট প্ল্যান করুন, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন, পর্যাপ্ত ঘুমান এবং ইমিউনিটি বৃদ্ধি করুন;
- বাইরে থেকে ফিরে এবং হাঁচি-কাশি দেওয়ার পর হাত সাবান-পানি ব্যবহার করে ধুয়ে নিন অথবা ৭০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত জীবাণুনাশক (Sanitizer) দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন;
- বন্য প্রাণী খাওয়া বা এ ধরনের প্রাণীর সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত থাকুন। হাঁস-মুরগি ও ডিম খাওয়ার আগে সঠিক তাপমাত্রায় রান্না করুন;
- বেড়াতে যাওয়া, দাওয়াতে যাওয়া ও আড্ডা দেওয়া থেকে বিরত থাকুন;
- অসুস্থ হলে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ভিড় এড়িয়ে চলুন। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরুন। আপনার জন্যে সাধারণ কাপড়ের মাস্কই যথেষ্ট। এটা পরা এবং খোলার নিয়ম অনুসরণ করুন।
- বারবার ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতিবার ব্যবহারের পর হালকা গরম পানিতে সাবান গুলিয়ে ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিবেন;
- জনাকীর্ণ এলাকায় যাতায়াত বা অন্যান্য লোকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের সময় অবশ্যই মাস্ক পরুন;
- আপনি যদি মাঝারি এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে থাকেন, তবে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন বা কমিয়ে আনা বা সীমিত রাখার চেষ্টা করুন;
- কোয়ারেনটাইনে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলামেশা পরিহার করুন এবং বিশেষ প্রয়োজনে মেলামেশার সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং জীবাণুমুক্তকরণের দিকে মনোযোগ দিন। ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করুন এবং মাস্ক পড়ুন