বার্তা সংস্থা পিপ (পাবনা) : সাঁথিয়া পৌরসভা নির্বাচনে পর পর তিনবারের নির্বাচিত মেয়র মিরাজুল ইসলাম প্রামানিকের নাম বাদ দিয়ে অপর তিনজন প্রার্থীর নামের তালিকা পাঠানো ও কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ওয়ার্ড কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সাঁিথয়া উপজেলা ও পৌর আ’লীগ দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এতে করে আ’লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
সাঁথিয়া পৌরসভা নির্বাচন আসন্ন। দলের পক্ষ হতে মেয়র প্রার্থীদের তালিকা না চাইলেও উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বপ্রনোদিত হয়ে পর পর তিন বারের নির্বাচিত সাঁথিয়ার মেয়র মিরাজুল ইসলাম প্রামানিকের নাম বাদ দিয়ে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক তপন হায়দার সান, পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ম্হবুবুল আলম বাচ্চু ও আ’লীগের নেতা নফিজ উদ্দিনের নাম জেলা আ’লীগের মাধ্যমে কেন্দ্রে প্রেরণ করেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়র সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা ও নানা প্রশ্নের দেখা দেয়। এছাড়া পৌর আ’লীগের ওয়ার্ড কমিটির মেয়াদ শেষ না হলেও নির্বাচনের ঠিক পূর্বমুহুর্তে কোন কারণ ছাড়াই কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি গঠনের ফলে ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ওই কমিটির সদস্যদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এজন্য পৌর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিলে নবগঠিত অবৈধ ওয়ার্ড কমিটি বাতিলের জন্য পাবনা জেলা আ’লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।
কোন কারণে ও কার পরামর্শে পর পর নির্বাচিত মেয়র মিরাজুল ইসলামকে বাদ দিয়ে তিনজন প্রার্থীর তালিকা প্রেরণ করলেন, জানতে চাইলে উপজেলা আ’লীগের সম্মানিত সভাপতি ও সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার বলেন, প্রার্থী নামের তালিকা না চাইলেও অগ্রিম ভাবে পৌর আ’লীগের সিদ্ধান্তের কারণে আ’লীগের গঠনতন্ত্র ২৮/৫ ধারা অনুসারে আমরা ৩ জনের নামের তালিকা প্রেরণ করেছি। বর্তমান মেয়রের সময় পৌর সভার কোন উন্নয়ন না করায় তার নাম পাঠানো হয়নি। পৌর ওয়ার্ড কমিটি গঠনের ব্যাপারে তিনি বলেন, দল চাইলে যে কোন সময় নতুন করে কমিটি গঠন করতে পারে।
মেয়র মিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি নৌকা প্রতিক নিয়ে পর পর তিনবার বিজয়ী হয়েছি। তারা কোন ঘোষণা না দিয়ে বা প্রার্থীতা আহবান না করেই হীন স্বার্থে আমার নাম বাদ দিয়ে প্রার্থীর তালিকা প্রেরণ করেছেন। গত নির্বাচনে উপজেলা আ”লীগ সভাপতি ,সাধারণ সম্পাদক ও পৌর আ”লীগ সাধারণ সম্পাদক আমার ও নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও এবং উপজেলা সভাপতি ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে না গেলেও আল্লাহর রহমতে জনগণের ভালবাসায় বিজয়ী হয়েছিলাম। এবারও তারা একই পথ অনুসরণ করে আমাকে বাদ দিয়ে নামের তালিকা প্রেরণ করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, সরেজমিনে আসলে দেখবেন তিনজন মিলেও আমার অর্ধেক ভোট পাবে না ইনশাল্লাহ।
ওয়ার্ড কমিটির গঠনের ব্যাপারে ৯নং ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক আতিকুল্লাহ আল মাহাদি জিয়া বলেন, হীনস্বার্থ ও অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য কমিটির মেয়াদ থাকা সত্তেও এবং কমিটি না ভেঙ্গেই নির্বাচনের আগে নিজেদের পছন্দের লেঅক দিয়ে তরিঘরি করে কমিটি গঠন করেছে।
বর্তমান পৌর মেয়রের নাম বাদ দিয়ে ৩জন প্রার্থীর নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে ৬৮ পাবনা-১(সাঁথিয়া-বেড়া) এর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেন, সাঁথিয়া পৌসভার মেয়র প্রার্থীদের নামের তালিকা পাঠানোর ব্যাপারে আমার সাথে কোন পরামর্শ করা হয়নি এবং আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।
রাজনীতিতে শেষ বলে কোন কথা নেই। যে শত্রু সেই বন্ধু,আবার যে বন্ধ ুসেই শত্রু। রাজনিতীর মারপ্যাচে কেউ গহীন সাগরে পড়ে যায়, আবার কেউ বিজয়ের হাসি হেসে ফুলের মালা পড়ে জননন্দিত নেতা হয়ে যান। এ নির্বাচনে আ”লীগ দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের জন্য ছলে বলে কৌশলে চলছে জোর লবিং,গ্রুপিং ও তদবীর। চা-স্টলে,দোকানপাট, অফিস-আদালত, হাট-বাজার ও মহল্লায় একই প্রশ্ন কে হচ্ছেন নৌকার কান্ডারি। কার কপালে পড়বে জয়টীকা।