‘দেশ আজ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। আজকে যখন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় এসেছে, কর্ণফুলী টানেল ও মেট্রোরেলসহ দেশের বড় বড় প্রকল্পগুলো যখন উদ্বোধনের সময় এসেছে ঠিক তখনই দেশের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে বিএনপি। তারা পরিবেশকে রক্তাক্ত করার চেষ্টা করছে। ‘
সোমবার (২৯ মে) দুপুরে বেড়া বিবি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে পাবনার বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোকসেদুল আলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কার্যকারী সদস্য সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু প্রমুখ।
ভিডিও কনফারেন্সে এসএম কামাল বলেন, ‘গণতন্ত্রের মানস কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ উন্নয়নের শিখরে উর্ত্তীন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজকে যখন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, ঠিক তখনই একটি পক্ষ দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন পুরো দেশে তারা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। খালেদা জিয়া ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। বাংলাদেশকে খুনের রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে পুরো অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশ বিশ্বকে চমকে দিচ্ছে। বাংলাদেশের অবস্থা পাল্টে গেছে।
প্রধান অতিথি ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, বাংলাদেশের সৃষ্টিতে আছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর বাংলাদেশের সমৃদ্ধিতে আছেন বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা প্রান্তিক জনগণের জন্য কাজ করছেন। দেড় কোটি মানুষকে মোবাইলে প্রণোদনা দিয়েছেন। কৃষকদের ভর্তুকি দেন, প্রত্যেকটি সেক্টরে উনি কাজ করেছেন। এর আগে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে মা-বোনদের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক করেছিলেন কিন্তু এই কমিউনিটি ক্লিনিককে ছাগলের ক্লিনিকে পরিণত করেছিল খালেদা জিয়া, কিন্তু শেখ হাসিনা আবারো ক্ষমতায় এসে সেই ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছেন গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে ভালোবেসে। উনি প্রত্যেকটা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এনে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হবে। শেখ হাসিনা যাকে নৌকার মনোনয়ন দেবেন তাকে বিজয় করে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় নিয়ে আসতে হবে। আমাদের নেত্রী মানুষকে ঘর দিয়েছেন, জমি দিয়েছেন, খাদ্য দিয়েছেন। তাই আবারও তিনি যদি ক্ষমতায় আসেন এই সবকিছু অব্যাহত থাকবে।
সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম বলে, শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের নেত্রী, কৃষকের নেত্রী, শ্রমিকের নেত্রী, যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। তার কাছে মুখ্য বিষয় সাধারণ মানুষের কল্যাণ, কৃষক-শ্রমিকের কল্যাণ, তৃণমূল মানুষের কল্যাণ। খালেদা জিয়া আদমজী জুটমিলসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল। শ্রমিকরা না খেয়ে মরেছিল। সেই অবস্থা আর নেই।’
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রকারীরা মাঠে নেমে গেছে, তারা নেত্রীকে বাজে কথা বলে, কটূক্তি করে, সাধারণ ছাত্র সমাজ তাদেরকে রুখে দিয়েছেন। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে যখন পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, রূপপুর প্রকল্প ও মেট্রোরেল একটার পর একটা যখন উদ্বোধন হবে ঠিক তখন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের সৈনিকরা মাঠে নেমে গেছে, কারণ তারা সেগুলো চান না। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগের তৃণমূল সেই ষড়যন্ত্র রুখে দিব। খালেদা জিয়া বলেছিলেন আওয়ামী লীগ পদ্মা সেতু করতে পারবে না, আর মানুষকে বলেছিল করলেও এই পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে চলাচল যাবে না। কিন্তু আজ পদ্মা সেতু প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘরে ও ঘরের বাইরে ষড়যন্ত্র চলছে। ঘরের ও বাইরের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ দস্যুদেরকে রুখে দিচ্ছেন। যারা আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেছে, নৌকার বিরোধিতা করেছে তাদের মুক্ত আওয়ামী লীগ করা প্রয়োজন। নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে যারা কাজ করেছেন তাদের আওয়ামী লীগের জায়গা দেয়া ঠিক হবে না।
তিন আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ নির্মাণে ২০৪১ সালের ডাক দিয়েছেন। ধূমপানমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায়, মাদক মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনার লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশ যেমন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত ও অপরাধমুক্ত হবে, ঠিক গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।
সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম মানিক, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বেলায়েত হোসেন বিল্লু, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শিবলী সাদিক, বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও আমিনপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বাবু প্রমুখ।