যেকারণে ৫ দিন ধরে পাবনায় করোনা রোগী নেই

পাবনা জেলায় গত ৩০ জুন একনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর গত ৫ দিনের মধ্যে আর কোন রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংবাদ পাওয়া যায়নি। পাবনায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ৪৪৭ জন।

পাবনায় আর কোনও রোগী শনাক্ত না হওয়ার কারণ টেস্ট কার্যক্রম বন্ধ থাকায়। জেলা কয়েকদিন ধরে  করোনার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে চরম অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। রাজশাহী ল্যাবে ধারণ ক্ষমতা না থাকায় পাবনার সংগৃহীত নমুনা নেয়া বন্ধ করে দেয়ায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

নমুনা পাঠানো ৩ দিন বন্ধ থাকার পর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ অনেক দেন-দরবার করে গত বুধবার সংগৃহীত ১ হাজার জনের নমুনা ঢাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে। তবে এই পরীক্ষার ফলাফলও এখনও আসেনি।

এ দিকে করোনা পরীক্ষার অচলাবস্থার কারণে করোনার উপসর্গে থাকা রোগীরা রয়েছেন উৎকণ্ঠায়।

প্রসঙ্গত, আক্রান্তের সংখ্যা অনুযায়ী সম্প্রতি পাবনা সদর ও সুজানগর উপজেলাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, পাবনাসহ উত্তরাঞ্চলের ৫ জেলার নমুনা পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত ল্যাব রাজশাহী। এখানে ৪টি পরীক্ষা সেন্টারে প্রতিদিন এক শিফটে ৯৪টি নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা রয়েছে। এই ল্যাব থেকে নমুনা পরীক্ষার ফল এমনিতেই ৭-৮ দিন করে সময় লাগত। কিন্তু এখন নমুনার এতই চাপ যে ডাবল শিফটে পরীক্ষা করেও তারা শেষ করতে পারছে না।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল জানান, জেলার নমুনা সংগ্রহ বন্ধ নেই। বুধবার সংগৃহীত ১ হাজার নমুনা বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ের ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, পাবনায় দ্রুত একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন জরুরি। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের তরফ থেকে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট মহলে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।

তথ্য মতে, গত ১৬ এপ্রিল থেকে পাবনার চাটমোহরে একজন রোগী করোনা শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে পাবনায় প্রথম করোনা দেখা দেয়। তা মে মাসে সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও জুন মাসে ব্যাপক আকার ধারণ করে। জুনের শেষে দিকে হু হু করে বাড়তে থাকে করোনা রোগীর সংখ্যা। ২৯ জুন পর্যন্ত পাবনায় পুলিশ, চিকিৎসক, ব্যাংকার, সাংবাদিক ও স্বাস্থ্য কর্মীসহ মোট ৪৪৭ জন করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন।

এ পর্যন্ত করোনায় ৮ জন এবং করোনা উপসর্গে ১২ জনসহ জেলায় ২০ জন মারা গেছে। সদর ও সুজানগর উপজেলাকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়।

২৮ জুন পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এবং রিপোর্ট আসে ৪ হাজার ৩৫২ জনের। কিন্তু ২৮ জুনের পর থেকেই নমুনা পরীক্ষা নিয়ে এই অচলাবস্থা দেখা দেয়। ২৮ জুন ১৬ জনের এবং ২৯ জুন ১ জনের শনাক্ত রিপোর্ট আসে। এরপর আর কোনো রিপোর্ট পাবনায় আসেনি।

এ দিকে জেলায় অফিস-আদালতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানা হলেও গণপরিবহন, বাণিজ্যকেন্দ্র, হাট-বাজারসহ কোথাও স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না।

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ