পাবনার সুজানগরে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে তাঁতীবন্দ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের সভাপতিকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যানের লোকজন।
সোমবার সকালে তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের খা পাড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ সভাপতিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলায় আহত তাঁতীবন্দ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি খন্দকার আব্দুল কুদ্দুস অভিযোগ করেন, আগামী ১৯ এপ্রিল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ইফতার মাহফিল আয়োজন নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীনের সাথে আলোচনার জন্য ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হারুন অর রশিদের মোটর সাইকেলে সকালে সুজানগর উপজেলা পরিষদে যাচ্ছিলাম। পথে খার পাড়া এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মৃধার ভাই মানিক মৃধার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতে আমাদের উপর আক্রমণ করে। আমাদের কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই তারা লাঠিসোঠা, রড দিয়ে পেটাতে শুরু। আমাদের চিৎকারে স্থানীয় মানুষ ছুটে এলে তারা চলে যায়। পরে, স্থানীয় লোকজন আমাদের উদ্ধার করে সুজানগর হাসপাতালে পাঠায়।
সুজানগর উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার জানান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল ওহাব দীর্ঘদিন ধরে দলে গ্রুপিং সৃষ্টি করে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাঁতীবন্দ ইউপিতে খন্দকার আব্দুল কুদ্দুস চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হন আব্দুল ওহাব ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মৃধা। তারা গত সপ্তাহে এলাকায় আলাদা ইফতার মাহফিল করেছেন। মতিন মৃধার নির্দেশেই আব্দুল কুদ্দুস ও হারুনকে মারপিট করা হয়েছে। আমারা এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। মতিন মৃধার আপন ভাই বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত।
সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল ওহাব নিজ বলয় তৈরী করে আধিপত্য বিস্তার করতে দলের বাইরের লোকজনকে নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে ইফতার মাহফিল করে বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে ইন্ধন যোগাচ্ছেন। কয়েকদিন আগেই তিনি তাঁতীবন্দ ইউনিয়নে ইফতার মাহফিল করেছেন। এরপরই পরিকল্পিত হামলা করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুুস ও যুবলীগ সভাপতি হারুন অর রশিদকে মারপিট করা হয়েছে। আমি বিষয়টি দলের উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে জানিয়েছি। ঢাকায় বসবাসকারী বিতর্কিত এক নেতা এলাকায় এসে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছেন। যার এলাকায় কোন জনপ্রিয়তা নেই, টাকার বিনিময়ে সালাম কিনে কতিপয় দূর্বৃত্তদের সাথে নিয়ে পুরো সুজানগরের রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট করছেন। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য ওই বিতর্কিত ও কথিত নেতা দায়ী।
তবে হামলায় নিজ পরিবারের জড়িত থাকার অভিযোগ অসত্য বলে দাবী করেছেন তাঁতীবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মৃধা। তিনি বলেন, আমি ইউনিয়ন পরিষদে মিটিংয়ে ছিলাম। সেখান থেকেই মারামারির খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় আমার কিংবা আমার পরিবারের কারো সম্পৃক্ততা নেই।
সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল ওহাব বলেন, ইফতার মাহফিলের সাথে রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই। উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদকও আলাদাভাবে ইফতার মাহফিল করছেন। তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের মারপিটের ঘটনাও রাজনৈতিক কারণে নয়। ব্যক্তিগত পূবর্ শত্রুতায় তাদের মধ্যে মারামারি হয়েছে বলে শুনেছি।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, মারামারির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।