কঠোর লকডাউনের আগে স্রোতের মত মানুষ ঢাকা থেকে পাবনা আসছে । একই চিত্র পাবনা থেকে ঢাকা যাবার ক্ষেত্রে। আসন্ন রমজান উপলক্ষে মানুষ যার যার জায়গায় থিতু হবার উদ্দশ্যেইে এই জনস্রোত।
অনেকেই ভেবেছিলেন, রমজান এবং কঠোর লকডাউন সিথিল করা হবে ১২ ও ১৩ এপ্রিল। কিন্তু বাস্তবে একই ধারার ঢিলেঢালা লকডাউনে ঘরমুখো মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে ও বিপাকে।
সোমবার (১২ এপ্রিল) ভোর ছয়টা থেকে ঢাকার টেকনিক্যাল মোড় থেকে গাবতলি আমীনবাজার পর্যন্ত নারী পুরুষ শিশু বৃদ্ধসহ ঘরে ফেরা মানুষরে ভিড় দেখা গেছে। দূরপাল্লার গণপরিবহন না থাকায় খুঁজতে হয়েছে বিকল্প ব্যবস্থা। সিএনজি, ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত রিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসে গাদাগাদি করে মানুষ উঠছে কোন সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই।
গাবতলি এলাকায় দেখা গেছে কিছু মাইক্রোবাস ১২ থেকে ১৪ জন যাত্রী তুলছে। আরিচা পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। আর এসব ঘটছে পুলিশের নাকের ডগায়। একজন মাইক্রোবাস চালক জানালেন পুলিশকে ম্যানেজ করেই যাত্রী বহন করা হচ্ছে।
এদিকে সকাল ৯ টার দিকে আরিচা ঘাটে দেখা গেছে, আরিচা-কাজিরহাট রুটে ট্রলারগুলো ঠাসাঠাসি করে লোক তুলছে। তবে সোমবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে স্পিড বোড।
আরিচা থেকে সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে মানুষ সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই গাদাগাদি করে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে ট্রলারে চেপে আরিচা থেকে কাজীরহাট ঘাটে আসছে প্রখোর রোদ উপেক্ষা করে। প্রতি ১৫ মিনিট পরপর ট্রলার ছাড়ছে আরিচা ঘাট থেকে।
বেশি ভাড়া কেন নেয়া হচ্ছে? এমন প্রশ্নে একজন ট্রলার মালিক জানান, প্রতি ট্রিপে পুলিশকে দিতে হচ্ছে ৬শ টাকা করে। আরিচার ট্রলার ঘাটে দেখা গেল শিবালয় থানার এ এস আই জাহাঙ্গীর, এ এস আই শরীফসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ ট্রলার ছাড়ার তদারকি করছেন। তারা নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে অর্থ লেনদেনসহ ট্রলার মালিকদের সাথে রফাদফা করছেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে একজন স্পিড বোড মালকি জানালনে, পুলিশের সাথে বনবিনা না হওয়ায় আজ স্পিড বোড বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
একই চিত্র দেখা গেল কাজিরহাট ঘাটে। এখানে ট্রলার প্রতি ৬শ টাকা করে নিচ্ছে নৌপুলশি। এ প্রতিবেদক ট্রলার মালিকদের সাথে কথা বলার সময় দেখা গেল নৌপুলিশ সটকে পড়েছে। কেন সামাজকি দূরত্ব ছাড়াই গাদাগাদি করে ট্রলারে লোক তোলা হচ্ছে এবং আকস্মিকভাবে কেন স্পিড বোড বন্ধ করে দেয়া হলো? এমন প্রশ্নের উত্তর এ এস আই শরীফরে কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ঘাটে মানুষের দুর্ভোগের চেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো- সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই পাবনায় যেভাবে মানুষ ঢুকছে তাতে জেলায় করোনা সংক্রমণ আগের চেয়ে কয়েকগুন বেড়ে যেতে পারে।