ভাড়া বাসায় অবস্থান করে স্বর্ণের দোকানে ডাকাত করতেন তারা

প্রথমে দেশের বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত ও পরিকল্পনা করতেন, এরপর সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে কিছুদিন অবস্থান করতেন। এরপর সুযোগ বুঝে চুরি ও ডাকাতি করেই সেখান থেকে সটকে পড়তেন। তাদের চুরি-ডাকাতির প্রধান টার্গেট স্বর্ণের দোকান। এমন আন্ত:জেলা চোর ও ডাকাতচক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় চোরাই সোনা, রুপা ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনশী। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলমসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনশী জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ আন্তজেলা চোর ও ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা সাধারনত কোন এলাকায় চুরি সংঘঠনের আগে সেই এলাকায় অবস্থান করে পরিকল্পনা মাফিক চুরি করে এলাকা ত্যাগ করে। স্থানীয় কারো সাথে তাদের যোগাযোগও থাকেনা। তারা মুলতঃ দেশের বিভিন্ন এলাকার স্বর্ণের দোকান চুরি-ডাকাতি করে। তাদের অপরাধের ধরণ প্রায় একই।

তিনি জানান, গত ২৯ নভেম্বর রাতে ঈশ্বরদী উপজেলার আওতাপাড়া বাজারে মল্লিকা জুয়েলার্সে নামের এক স্বর্ণের দোকানে চুরি সংঘটিত হয়। চোরের দল ওই স্বর্ণের দোকানের পাশে অবস্থিত কাপড়ের দোকানের ভিতর ঢুকে পাশের ওয়াল ছিদ্র করে স্বর্ণের দোকানে প্রবেশ করে চুরি সংঘটিত করে।

এ ঘটনায় ৩ ডিসেম্বর ঈশ্বরদী থানায় মামলার পর অভিযানে নামে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় টানা তিনদিন অভিযান চালিয়ে রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, বাগেরহাট, নাটোর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চোর ও ডাকাতচক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযানে তাদের কাছ থেকে চোরাইকৃত ছয় ভরি ৫ আনা সোনা, ৫০ ভরি রুপা, স্বর্ণ বিক্রির ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা সহ চুরির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্চাম জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বাগেরহাটের শরনখোলা উপজেলার মধ্য খোন্তাকাটা গ্রামের ডাকাত সর্দার শহিদুল হাওলাদার (৪৯), একইগ্রামের আব্দুল মালেক (৪০), বাবুল হাওলাদার ওরফে ভারানী বাবুল (৫২), বাবুল হাওলাদা ওরফে বোকদা বাবুল (৫০), নাটোর সদর উপজেলার পারখোলাবাড়িয়া গ্রামের সাঈদ আলী (৫৭), একই উপজেলার হৈবতপুর গ্রামের জালাল উদ্দিন (৩৭), বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মোরশেদ সড়ক শেহলাবুনিয়া গ্রামের রুস্তম আলী শেখ (৬০), শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর গ্রামের শান্ত মিস্ত্রি (২০) ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের বাবুল কুলু (৫৩)।

এদের মধ্যে ডাকাত সর্দার শহিদুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ ১০টি, মালেকের বিরুদ্ধে ৭টি, ভারানী বাবুলের বিরুদ্ধে ১০টি, বোকদা বাবুলের বিরুদ্ধে ৮টি, সাঈদের বিরুদ্ধে ৩টি, জালালের বিরুদ্ধে ৩টি, রুস্তমের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ