পাবনার ফরিদপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান নাসরীন পারভিন মুক্তির কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেতাকর্মীরা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও দলবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডের অভিযোগে একাধিকবার বহিষ্কার হয়েও আবারও পাবনা জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের শীর্ষ পদ বাগিয়েছেন তিনি।
পাবনা জেলা মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেই তিনি বিএনপির প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতেও অংশগ্রহণ করে থাকেন। দিয়ে থাকেন জয় বাংলা শ্লোগানও।
অভিযোগ আছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকার কারণে সেই নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেন। সেই সময় দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল স্তর থেকে তিনি বহিষ্কৃত হোন। এরপর থেকেই তিনি সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচিতেও অংশগ্রহণ করে থাকেন।
ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান মাজেদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাপ হোসেন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমানের সঙ্গে এসব অনুষ্ঠানের বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে আছে।
পাবনা জেলা বিএনপির শীর্ষ এক নেতাকে তিনি ‘বাবা’ বলে ডাকেন। কেন্দ্রীয়ভাবে প্রভাবশালী ওই নেতাকে ‘বাবা’ ডাকা সম্পর্কের সিড়ি বেয়ে বহিষ্কৃত অবস্থায় গত মে মাসে ঘোষিত পাবনা জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়েছেন তিনি।
এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমান পাবনা বার্তা ২৪ ডটকমকে জানান, ‘আমাদের দলীয় কর্মসূচিতে নয়, আমাদের কোনও অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র বা এমপি সাহেব থাকলে সেখানে যান। তাদেরকে ‘বাপ’ ‘বাবা’ ‘আব্বু’ এগুলো ডেকে পরিষদের বিভিন্ন কাজ-টাজ বাগিয়ে নেয় আরকি।’
এবিষয়ে পাবনা জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী পূর্ণিমা ইসলাম পাবনা বার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, ‘আসলে ও একটা চেয়ারে আছে। তাই চেয়ারম্যান-মেয়ররা ডাকলে এভোইড করতে পারে না, যেতে বাধ্য হয়। নারী তো- প্রতিবাদও করতে পারে না।’
বহিষ্কৃত নেত্রী কিভাবে পদ পেলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি পাবনা বার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনের সময় দলের অবাধ্য হওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল সত্য, কিন্তু পরবর্তীতে আমাদের মহাসচিব নরমালি সারা দেশে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিল, এরপর থেকে সারা দেশের বহিষ্কৃত নেতাদের মতো ওর বহিস্কারও নরমালি প্রত্যাহার হয়ে গেছে, এরপর সম্প্রতি মহিলা দলের কমিটি হলে তাকে পদ দেয়া হয়েছে।’
এবিষয়ে পাবনা জেলা মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদ নাসরীন পারভিন মুক্তি পাবনা বার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে হাজার হাজার অভিযোগ আসে, আসুক। এইসব অভিযোগে আমার কোনও সমস্যা নেই। আমি আওয়ামী লীগের কোনও দলীয় প্রোগ্রামে অংশ করি না, সরকারি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করি। আর অবশ্যই আমার বহিষ্কার প্রত্যাহার করা হয়েছে, বহিষ্কার প্রত্যাহারের পরই আমাকে পদ দেয়া হয়েছে।’