পাবনা পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভেদ এখন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। প্রকাশ্যে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা দল মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে মাঠে নেমেছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে আটঘাট বেঁধে নেতারা এখন শহরের অলিগলি চষে বেড়াচ্ছেন।
আলোচিত এই নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও পাবনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ-সভাপতি আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি। আর মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) হিসেবে নারিকেল গাছ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ উদ্দিন প্রধান।
নেতাকর্মীরা বলছেন, এই নির্বাচনে মূলত জেলার শীর্ষ নেতাদের উজ্জতের লড়াই চলছে। তাদের অস্তিত্বের লড়াই চলছে। তাদের কথার বাইরে গিয়ে একজন শিল্পপতির হস্তক্ষেপে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে- এমন সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না তারা। পাবনার রাজনীতিতে দেশের শীর্ষ এই শিল্পপতির ধারাবাহিক হস্তক্ষেপ আর নব্য কিছু আওয়ামী লীগার কারণে নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তারা। তাই নিজেদের অস্তিত্বের প্রমাণ ও রক্ষায় একজোট হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়েছেন তারা।
মনোনয়ন নিয়ে ক্ষুব্দ হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে এবং শিল্পপতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে প্রচার-প্রচারণয় অংশ নিতে দেখা গেছে সাবেক এমপি ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মকবুল হোসেন সন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আবদুর রহিম পাকন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাবু, আব্দুল হামিদ মাস্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বেলায়েত আলী বিল্লু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট তসলিম হাসান সুমন, জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আহাদ বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক কামিল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সরদার মিঠু, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মামুন, পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহিন, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রকিব হাসান টিপু, পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ আজাদ প্রমুখকে।
এছাড়াও প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা ইদ্রিস আলী বিশ্বাস, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ফুরকান আলী, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ সাহা, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি শহীদুর রহমান শহীদ, সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল আলম তৌফিক, সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামসুন্নাহার রেখা, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকাশ্যে আসা নেতাদের বাইরে যেসব শীর্ষ নেতারা রয়েছেন তারাও ভেতরে ভেতরে বিদ্রোহী প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে তারা কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেছেন। এছাড়াও কিছু নেতা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
এ ব্যাপারে ফোনে পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি তসলিম হাসান সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পাবনা বার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, এব্যাপারে আপনারা (সাংবাদিক) সবই জানেন। নতুন করে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও ডকুমেন্টারি এভিডেন্স হিসেবে বক্তব্য বা সাক্ষাৎকার দিতে চাচ্ছি না। তাই এ ব্যাপারে (পাবনা পৌরসভা নির্বাচন) কোনও বক্তব্য দিতে পারছি না বলে দুঃখিত।
এছাড়াও শরীফ উদ্দিন প্রধানের প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেয়া কয়েকজন শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পাবনা বার্তা ২৪ ডটকমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও তারাও আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
অর্ডার করুন