পাবনায় জয়কালী মন্দিরে প্রতিবাদ সভায় হামলা-ভাঙচুর, আহত ৫

পাবনা জয়কালী বাড়ি মন্দিরে এবারের চৈত্র সংক্রান্তি পূজায় হাজরা খেলা বন্ধের প্রতিবাদে ডাকা সভায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক তপন কুমার সরকার হরির অবস্থা গুরুতর। তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা শহরের জয় কালী বাড়ি মন্দির প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল সনাতন ধর্মালম্বীদের চড়ক পূজার শেষদিনের হাজরা খেলা। ‌ প্রতিবছর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জয়কালী বাড়ি কেন্দ্রীয় মন্দিরে সমবেত হয় হাজরার দল। এখানে হাজরা খেলার পর তারা জেলার বিভিন্ন মন্দিরে রওনা হয়। কিন্তু এবার অজ্ঞাত কারণে এই মন্দিরে হাজরা খেলা বন্ধ ছিল। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজরার দল এসে ফিরে গেছে।

দেশের স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম এই মন্দিরে সনাতন ধর্মালম্বীদের এই উৎসব বন্ধ থাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে পরেরদিন শুক্রবার সকালে মন্দির প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় ভূষণ রায়, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার সাহা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাদল কুমার ঘোষ প্রমুখ।

প্রতিবাদ সভা চলাকালীন সময়ে হঠাৎ হাজির হন মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রলয় চাকীর নেতৃত্বে একদল বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। ‌ প্রতিবাদ সভা পণ্ড করতে তারা অতর্কিতভাবে হামলা ও ভাঙচুর শুরু করে। এতে বাধা দিলে তপন কুমার সরকার হরিসহ বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। পরে পাবনা সদর থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হরির অবস্থা গুরুতর হলে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত তপন কুমার সরকার হরি বলেন, আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রলয় চাকীর নেতৃত্বে তার কর্মচারী ও সন্ত্রাসীরা হামলা করে। আমাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। প্রলয় চাকি এই মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই মন্দিরে হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন উৎসব পালনে বাধা সৃষ্টি করে আসছেন। ‌ এ নিয়ে অনেকেই তার পদত্যাগ দাবি করে আসছেন। এসবের ক্ষোভ মেটাতে আজকে এই হামলা ও আমাকে হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। দুই পক্ষকে সরিয়ে দেয়া দিয়ে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন পাবনা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাদল কুমার ঘোষ। একই সঙ্গে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ