একাত্তরে মানবতাবিরোধী মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও পাবনা-৫ আসনের পাঁচ বারের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আবদুস সুবহানের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জামায়াতের এই প্রভাবশালী এই নেতা প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক দারুল আমান ট্রাস্ট ময়দান মাঠে জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় লাখো মানুষের উপস্থিতি ছিলো।
কারাবন্দি অবস্থায় শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করলে সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ঢাকা থেকে মরহুমের মরদেহ ওইদিন রাত ৩ টার দিকে নিজ শহর পাবনায় নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার সকাল ৯ টায় শহরের দিলালপুর পাথরতলার নিজ বাড়িতে ও দারুল আমান ট্রাস্ট ময়দানে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলার প্রভাবশালী এই নেতার দারুল আমান ট্রাস্ট ময়দানের দ্বিতীয় জানাজায় মানুষের ঢল নামে। ময়দানে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। ময়দান ছেড়ে আশপাশের রাস্তা ও জায়গায়ও অবস্থান নেন মানুষ।
মরহুমের ছোট ছেলে হাফেজ মুজাহিদুল ইসলামের ইমামতিতে জানাজা নামাজে অংশ নেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা উত্তরের আমির ড. রেজাউল করিম, পাবনা জেলা আমির আবু তালেব মন্ডল, সেক্রেটারি ইকবাল হোসাইন প্রমূখ।
আবদুস সুবহান জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতা ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করায় সংগঠনে তার প্রভাব ছিল উল্লেখ করার মত। তিনি দলীয় টিকিটে পাবনা-৫ আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৬২ এবং ১৯৬৫ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং তার পরবর্তী মেয়াদে বিরোধী দলের সিনিয়র উপ-নেতার ভূমিকা পালন করেন। এরপর ১৯৯১ সালে পাবনা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সংসদে তিনি জামায়াতের সংসদীয় দলের উপ-নেতা ছিলেন। ২০০১ সালে তিনি আবারও পাবনা-৫ আসন থেকে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন।
জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহান পাকিস্তান আমলে ছিলেন পাবনা জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য। তিনি পাবনা আলিয়া মাদরাসার হেড মাওলানা ছিলেন।
২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের এই প্রভাবশালী নেতাকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে প্রাণদণ্ড দেন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের আনা ৯ টি অভিযোগের মধ্যে ছয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে ফাঁসির রজ্জুতে ঝুলিয়ে দণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।