সমকাল থেকে নেয়া: পাবনার আতাইকুলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান আলীর গ্রামের বাড়ি যশোরে চলছে শোকের মাতম। তার শোকাহত বাবা দাবি করেছেন, আত্মহত্যা নয়, হত্যা করা হয়েছে হাসানকে।
আতাইকুলা থানার ছাদ থেকে রবিবার (২১ মার্চ) সকালে হাসানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের বক্তব্য, পারিবারিক অস্বচ্ছলতা ও ঋণের কারণে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
দুপুরে হাসানের গ্রামের বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তার আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও শুভাকাঙ্খীরা তাদের বাড়িতে ভিড় করেছেন। একমাত্র ছেলেকে হারানো হাসানের দরিদ্র ভ্যান চালক বাবার বিলাপ থেকে থামাতে পারছেন না।
হাসানের বাবা জব্বার আলী সমকালকে বলেন, আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে কেউ মেরে ফেলেছে। তিনি জানান, বুধবার হাসান তার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলে, হাসান তাকে জানায় ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা দিতে শুক্রবার খুলনায় আসবে। কিন্তু থানার ওসি তাকে ছুটি দিবে না। এ নিয়ে ওসির সঙ্গে হাসানের বাকবিতণ্ডা হয়।
হাসান আলীর দাদি জবেদা বেগম বলেন, শনিবার সন্ধ্যার পরও আমার সাথে হাসানের ফোনে কথা হয়েছে। তাকে খুলনায় পরীক্ষা দিতে যেতে দেয়নি বলে মন খারাপ। আমি তাকে বাড়ি আসতে বললে জানিয়েছিল মঙ্গলবারে বাড়ি আসবে। কিন্তু তার আগেই তারে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। বড় আদরের একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে হাসানের মা আলেয়া বেগম কাঁদতে কাঁদতে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন।
হাসান আলীর দাদা সম্পর্কের এক আত্মীয় আফছার উদ্দিন গাজী জানান, দরিদ্র ভ্যান চালক বাবা জব্বার আলীর দরিদ্র পরিবারে অনেক কষ্টে হাসান আলীর বেড়ে ওঠা। অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় চাচা হাবিবুর রহমানের চেষ্টায় তিনিসহ সকলের সহযোগিতায় তার লেখাপড়া শেষ করে সে। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করে নিজের যোগ্যতায় পুলিশের এসআই পদে চাকরি পায়। ট্রেনিং শেষে গত বছর পাবনার আতাইকুলা থানায় যোগ দেয়।
তিনি জানান, হাসানের বাবা প্রতি দিনের মতো রোববারও সকালে ভ্যান চালাতে যায়। সকাল ১০টার পর ভ্যানে অন্যের কাঠ নিয়ে বর্ষখোড়ার মোড়ে আসলে কেউ একজন তাকে হাসানের মৃত্যুর খবর জানায়।
কাঁদতে কাঁদতে জব্বার আলী সমকালকে বলেন, আমার হাসান আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। তিনি এ মৃত্যুর সুষ্ঠু সদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।