পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর কবরের নামফলক থেকে ‘শহীদ’ শব্দটি ঢেকে দিয়েছে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) সাঁথিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল খান সানা ‘শহীদ’ শব্দটি কালো কালি দিয়ে ঢেকে দেয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিলে এর প্রতিবাদ জানায় স্থানীয়রা।
রাতে তিনি সাঁথিয়ার ধোপাদহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতৃত্বে উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের মনমথপুর গোরস্থানে নিজামীর কবরে স্থাপিত নামফলকে শহীদ শব্দটি মুছে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল খান সানা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ধোপাদহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নিজামীর নিজগ্রাম মনমথপুর গোরস্থানে তার নামফলক থেকে শহীদ শব্দটি মুছে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির ডা. আব্দুল বাসেত বলেন, একজন মৃত মানুষের কবরে গিয়ে তার নামফলক থেকে শব্দ মুছে দেয়া অত্যন্ত গর্হিত কাজ। তিনি এ কাজের তীব্র নিন্দা জানান।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতার এই স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একপক্ষে এটিকা সাধুবাদ জানালেও অনেকেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ১৯৯১ এবং ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনে এমপি নির্বাচিত হন। চারদলীয় জোট সরকারের সময় ২০০১-২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি কৃষিমন্ত্রী ও ২০০৩-২০০৬ সাল পর্যন্ত শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী সাবস্ত্য হয়ে মৃত্যুদন্ডাদেশ পাওয়ার পর ২০১৬ সালের ১০ মে দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। পরেরদিন সকাল সোয়া সাতটার দিকে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মনমথপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
নিজামী ১৯৪৩ সালের ৩১শে মার্চ পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার সলঙ্গী-মনমথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৩ সালে কামিল এবং ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তার পিতার নাম লুৎফর রহমান খান। ব্যক্তিগত জীবনে নিজামী সামসুন্নাহার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পত্তির চার পুত্র ও দুই কন্যা রয়েছে।