পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার আর-আতাইকুলা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে আর আতাইকুলা ইউনিয়নের আতাকুলা বাজারের পাশে রঘুনাথপুর কলেজপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন-বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী (আনারস) আরশেদ আলী ভান্ডারী (৪৫), তার ছেলে দোলোয়ার হোসেন (২৫), ভাই আশরাফ আলী (৩৫), মোফাজ্জল হোসেন (৩০), উজ্জল হোসেন (২৮), হিরা মিয়া (৪০), মামুদ রানা (৩০), মোস্তাক আহমেদ (৩৪), বাবলু হোসেন (৩৮), নিঝুম( ৩০)।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরের দিকে বিদ্রোহী প্রার্থী (আনারস মার্কা) চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৫/২০ জনকে সাথে নিয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় গ্রামের মধ্যে গিয়ে ভোট চাইতে যায়। এরপর নৌকার লোকজন মিছিল নিয়ে আসলে দুইপক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কির সৃষ্টি হয়। এ সময় সংঘর্ষে রুপ নিলে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ অন্তত ১০/১১ জন আহত হয়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আর আতাইকুলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক আরশেদ আলী ভান্ডারী বলেন, সকালের পরে আমার সমর্থকদের নিয়ে ভোট চাইতে গেলে নৌকার লোকজন বাধা দিলে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশে হামলা চালায়। এসময় আমার অনেক সমর্থক আহত হয়।
তিনি নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় আশঙ্কায় প্রতিক পাওয়ার শুরু থেকে নৌকার লোকজন ভোট চাইতে দিচ্ছে না। নির্বাচনি পোস্টার ছেড়া থেকে শুরু করে অফিস ভাঙচুরসহ আমাকে বিভিন্নভাবে সময়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। সুষ্ঠু ভোট নিয়ে আমি শঙ্কার মধ্যে আছি।
তবে নৌকার প্রার্থী মিরাজুল ইসলাম মিরাজ হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার লোকজন হামলা করেনি। তৃতীয়পক্ষ হয়ত বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজনের উপর হামলা করেছে। আমারও অনেকে ভাল চায়না আবার বিদ্রোহী প্রার্থীরও শত্রু আছে। সব মিলিয়ে একটি পক্ষ আমার জনপ্রিয়তাকে নস্যাৎ করতে অপবাদ দিচ্ছে।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডের ইন্টার্ন চিকিৎসাক ডা.তারেক হাসান বলেন, আহতদের ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। আহত চেয়ারম্যান প্রার্থী আরশেদ আলীসহ দুইতিনজন মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। সিটি স্ক্যানসহ করেছে। সব ধরণের চিকিৎসা চলমান রয়েছে।
আতাইকুলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন ঘটনার সত্যযতা নিশ্চিত করে জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন ভোট চাইতে গেলে হামলা-সংঘর্ষ ও ধাওয়া -পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তির কথা শুনেছি। লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যরস্থা নেওয়া হবে।
পাবনা জেলা নির্বাচন অফিসের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মাহাবুবুর রহমান বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা না করতে সব প্রার্থীকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি কোন প্রার্থীর লোকজন হামলা চালায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত: আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে পাবন্র সাঁথিয়ার উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।