পাবনায় এবার নৌকা-স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে যুবক নিহত!

চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহতের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পাবনা জেলা সদরের চর তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী সমর্থকদের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

এঁদের মধ্যে গুরুতর আহত একজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া পাঁচটার দিকে ইউনিয়নের তারাবাড়িয়া বাজারে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত নাসিম শেখের (২৫) বাড়ি ইউনিয়নের টাটিপাড়া গ্রামে। গুরুতর আহত দুজন হলেন মুক্তার খান (২৬) ও মিজানুর রহমান (২৭)। এঁদের মধ্যে মুক্তার খানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হতাহতরা সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক। নিহত নাসিম স্বতন্ত্র প্রার্থীর চাচাতো ভাই বলে জানা গেছে।

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউপি নির্বাচন (চতুর্থ ধাপে) কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রবিউল হকের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান খানের বিরোধ চলছিল। এলাকায় পোস্টার লাগানো ও গণসংযোগ নিয়ে এর আগে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কয়েকজন সমর্থক ইউনিয়নের তারাবাড়ি বাজারে প্রচার চালাতে যান। এ সময় নৌকার সমর্থকেরাও সেখানে প্রচার চালাতে আসেন। দুই পক্ষ প্রচারণা চালানোর একপর্যায়ে মুখোমুখি হলে তাদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়।

এ সময় নাসিম শেখ নিজের মুঠোফোন দিয়ে সেই বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও করতে থাকেন। এতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কয়েকজন সমর্থক ক্ষিপ্ত হয়ে মুঠোফোনটি কেড়ে নিয়ে নাসিমকে মারপিট করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা যায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকেরা নাসিম শেখকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান অভিযোগ করেন, নির্বাচনের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকেরা মারমুখী ভূমিকায় রয়েছেন। তাঁরা অন্য কাউকে এলাকায় পোস্টার লাগাতে বা প্রচার-প্রচারণা চালাতে দিচ্ছেন না। এরই ধারাবাহিকতায় পরিকল্পিতভাবে তাঁরা তাঁর কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। তিনি এই ঘটনার বিচার চান।

এ ব্যাপারে জানতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রবিউল হকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এলাকার পরিবেশ এখন শান্ত। ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে ঘটনার পর থেকেই এলাকায় উভয় পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ