পাবনায় অজ্ঞাত রোগে একের পর এক মারা যাচ্ছে গরু। রহস্যজনক এই রোগে গত এক সপ্তাহে পাবনার চাটমোহরে মারা গেছে অন্তত ১০টি গরু। গরুর হঠাৎ এমন মৃত্যুতে স্থানীয় খামারী ও কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, চাটমোহরের মূলগ্রাম ইউনিয়নের চিরইল গ্রামের আব্দুল মমিনের ২টি, আবু তালেবের ২টি, জহুরুল ইসলামের ১টি, জামরুল ইসলামের ১টি, সাড়োরা গ্রামের মিজানুর রহমানের ২টি, জবেরপুর গ্রামের মুঞ্জিল হোসেনের ১টি, ইচাখালীর যৌথ মালিকানাধীন খামারের ১টি মারা যায়। এছাড়া সাড়োরা গ্রামের রফিকুল ইসলামের গর্ভবতী গাভী আক্রান্ত হলে বাছুরের মৃত্যু হয়েছে। জামরুলের আরেকটি গরু আক্রান্ত হয়েছে।
গরুর এমন মৃত্যুতে গরুর লালনপালন করা কৃষক ও খামারিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। অজ্ঞাত এক রোগে কোনো না কোনো খামারে মরে যাচ্ছে। আগামী কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা এই সব গরু আগেই বিক্রি করে দিচ্ছেন তারা। রোগটি সুনির্দিষ্টভাবে দ্রুত শনাক্ত ও চিকিৎসা করতে না পারলে বিপর্যয়ের আশঙ্কার কথা জানান খাত সংশ্লিষ্টরা। অনেক খামারী ও কৃষক নিঃস হওয়ার আগেই দ্রুততম সময়ে রোগ শনাক্তে সরকারকে আরও উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় পশুচিকিৎসক শহিদুল ইসলাম হাফিজ জানান, গরুগুলো দেখে মনে হয়েছে সর্দি জ্বরে আক্রান্ত ছিল। আক্রান্ত হবার পর হাপাচ্ছিল এবং সামনে থেকে পেছনে অথবা পেছন থেকে সামনের দিকে ঝুঁকে পরেছিল।
জবেরপুর গ্রামের মুঞ্জিল হোসেন বলেন, আমার দুইটি গরু ছিল। তার মধ্যে একটি মারা গেল। গরুটি মাঝে মধ্যেই কুকরে (বাঁকা হয়ে) উঠছিল। পেছন দিক হয়ে পরে ছটফট করছিল। মুখ দিয়ে লালা ঝরছিল। এক পর্যায়ে খাওয়া বন্ধ করে দেয়। আক্রান্তের তিন দিনের মাথায় মরে যায় গরুটি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আমরা মৃত গরুগুলোর প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য সিরাজগঞ্জ ও ঢাকায় পাঠিয়েছি। পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলাফল পেলে গরু গুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। অন্য গরু আক্রান্ত রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবো। আপাতত খামারীদের সবুজ ঘাস পরিবেশন বন্ধ রাখতে পরামর্শ দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে দ্রুত বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত ইসলাম।