চাটমাহরে অবস্থিত পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এবং কাশীনাথপুরে অবস্থিত পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর অভ্যন্তরে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা কারণে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। এ যেন মগের মুল্লুক।
কাশীনাথপুরে অবস্থিত পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার ও সহকারী জেনারেল ম্যানেজারের (সদস্য সেবা) বিরুদ্ধে অপরিকল্পিতভাবে যত্র-তত্র এস.টি.ডি ও এল.টি লাইন নির্মান,বিদ্যৎ সঞ্চালন ও বিতরনে অনিয়ম/দুর্নীতিসহ গ্রাহক হয়রানী এবং উৎকোচের বিনিময়ে অবৈধ করাত কলে অবেধভাবে বিদ্যৎ সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি সুজানগর উপজেলার দুলাই গ্রামের আঃ রহমানের নুতন করাত কলে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে, যার বন বিভাগের কোন লাইসেন্স তো নেই সে লাইসেন্স পাবার জন্য কোন আবেদনও করেনি।
সাঁথিয়া উপজেলার সাটিয়াখোলা গ্রামে মিতালী ছ মিল আগুন লেগে পুড়ে গেলে অবৈধভাবে পুনঃসংযোগ দেয়া হয়েছে। অথচ, সুজানগর উূপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের ২৪ মাইলের মোঃ মহিউদ্দীনের মিঞা টিম্বার ছ মিলে বিদ্যুৎ সংযোগ পাবার জন্য ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে যথা নিয়মে আবেদন করলেও উৎকোচ দিতে রাজি না হওয়ায় ঐ ছ মিলে আজও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি।
যদিও তিনি নিয়মানুযায়ী সমিতিতে ২৭ জানুয়ারী/২০ তারিখে ২১ হাজার ৪ শত ৫২ টাকা জমা প্রদান করেন। ২ সপ্তাহ আগে ৬৯ পাবনা-২ আসনের সাংসদ আহমেদ ফিরোজ কবীর পিবিএস-২ এর জি এম এমদাদুল হক কে মিঞা টিম্বার ছ মিলে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের অনুরোধ জানান।
এ খবর লেখার সময় মিঞা টিম্বার ছ মিলে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেবার কারন কী জানতে চাইলে জিএম এমদাদুল হক মুঠো ফোনে জানান, এমপি সাহেব ফোন করেছিলেন, আমরা এ ব্যাপারে ভাবছি এবং আরইবি তে কথা বলছি। মহিউদ্দীন জানায়, সে প্রায় ৫ বছর ধরে ডিজেল তেলের সাহায্যে ছ মিল চালিয়ে আসছেন। ১৯ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে সে বন বিভাগের লাইসেন্স পায়।
অপরিকল্পিতভাবে যত্র-তত্র এসটিডিও এলটিলাইন নির্মান করায় আবাদী জমির মধ্যে বিদ্যুতের খুটি পোতায় ঐ জমির মালিক ঐ জমিতে বাড়ী করতে গেলে খুটি সরানোর আবেদন করতে গেলেও ১৭২৫/= টাকা সমীক্ষা ফি জমা দিতে হয়। শুধু তাই নয়। খুঁটি সরাতে জমা দিতে হয় ৫৩০০০/=টাকা।
এরুপ একজন ভূক্তভোগী রানাউল্লাহ পরেছেন বিপাকে। বেড়া উপজেলার মাশুমদিয়া ইউনিয়নের দয়ালনগর গ্রামের মৃত সিদ্দিকউল্লার ছেলে রানাউল্লাহ গরীব মানুষ। বাড়ির জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এখন তাকে বাড়ী ছেড়ে ঐ জমিতে বাড়ী করতে হবে।
অতি কষ্টে সমীক্ষা ফি ১৭২৫/=টাকা জমা দিলে কয়েকমাস পর অফিসে জানতে গেলে তাকে জানান, হয় যে,৫৩০০০/=টাকা জমা দিলে খুটি সরিয়ে দেয়া যাবে। গোপন একটি সুত্র জানায়,আসলে একটি খুটি সরাতে খরচ হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। অথচ এ সমিতিকে দিতে হয় ৫৩০০০/=টাকা। অভিযোগ কেন্দ্রে কর্তব্যরত লাইনম্যানরা নিজেদের ইচ্ছেমতো বিদ্যুৎ বিতরন করেন।
এ ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্তে অবহেলাই প্রমান করে। সারাদেশে বিদ্যুতের উৎপাদনে ঘাটতি না থাকলেও এ অফিসের বিদ্যুৎ বিতরনে দায়িত্তরত লাইনম্যানরা তাদের ইচ্ছেমতো লোড সেডিং করতে থাকে। রাত ১০টা/১২টায় খামোখা লোড সেডিং করে মানুষের ঘুমের ব্যাঘাৎ ঘটায় এবং জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়।
কয়েকজন গ্রাহক জানায়, ১৯৭৯ সালে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ৪০ বছর ধরে প্রতি মাসে ১০/=টাকা করে মিটার ভাড়া দিয়ে আসলেও এখনো কী মিটারের মূল্য পরিশোধ হয়নি? যেখানে প্রতিটি মিটারের মূল্য ১০০০/=টাকা। প্রতিটি মিটারের জন্য জামানত বাবদ জমা দেয়া হয়েছে ৬০০/=টাকা।
অন্য দিকে প্রতি মাসের বিলে ডিমান্ড চার্জ বাবদ ৩০/- করে দিতে হচ্ছে। পাবনা প.বি.স.-২ এর কর্মকর্তাদের এসব অনিয়ম/দুণীতির কারনে তাদের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।