পাবনার আবাসিক হোটেলগুলো যেন অনৈতিক কাজের নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে। শহরের বেশিরভাগ হোটেলেও ঘণ্টা প্রতি উচ্চমূল্যে চুক্তিভিত্তিক ভাড়া দিয়ে চলছে এসব ব্যবসা। এতে খুব সহজেই অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজপড়ুয়া তরুণ-তরুণীরা। এছাড়াও পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকরাও সহজেই অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
এমন সামাজিক অবক্ষয় ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বিপদগামী হলেও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না প্রশাসনকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন- প্রশাসনসহ প্রায় সব মহলকে ম্যানেজ করেই তাদের এই অনৈতিক ব্যবসা চলছে। আর কিছু হোটেল মালিকরা অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। হোটেলগুলোর এমন অনৈতিক কাজে আশপাশের ব্যবসায়ীরাও ক্ষুব্ধ। কিন্তু মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পান না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাবনা শহরের সোনাপট্টি, আব্দুল হামিদ রোড, রুপকথা গলি, আওরঙ্গজেব রোডের বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেলের মালিকরা সংঘবদ্ধ দল হয়ে ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অবাধে আবাসিক হোটেলের নামে দেহ ব্যবসা ও মাদকের আখড়া গড়ে তুলেছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এসব হোটেলের পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রতিদিন সকাল হলেও উর্তি বয়সের তরুণ-তরুণীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। জোড়ায় জোড়ায় দিনব্যাপী চলে এমন আসা-যাওয়ায়। হোটেলের নিরাপত্তা বুঝে ঘণ্টায় ৩-৪ হাজার টাকার চুক্তিতে এমন ব্যবসা করছে মালিকারা।
শহরের আওরঙ্গজেব রোডের হাজী সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান জানান, ‘ভাই এটা নিয়ে আর কত বলবো। এর আগে এখানে পুলিশ অভিযান দিলেও দুই-একদিন পরেই তা আবার শুরু হয়। এখানে বাহির থেকে পতিতা নিয়ে এসে ব্যবসা করছে।’
সোনাপট্টি এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী মোতালেব সরদার বলেন, ‘আমাদের এই সোনাপট্টি, প্রেসক্লাব গলি আগে ভালোই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি যা চলতি তা ভাবতেও লজ্জা লাগে। আমাদের স্বর্ণের ব্যবসা। এখানে সমাজের বিত্তশালী ও সম্মানিত ব্যক্তিরা আসা-যাওয়া করে। কিন্তু পরিবেশ এতো নোংরা হয়ে গেছে তাতে এই এলাকায় ব্যবসা করাই মুশকিল হয়ে গেছে।’
কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের পুলিশ সুপার পাবনায় আসার পর অনেক ভালো ভালো কাজ করেছেন, তা পাবনাবাসী সারাজীবন মনে রাখবে, স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি মাদক, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক জগতে যে অবদান রেখেছেন তা অভাবনীয়। তাই মাননীয় পুলিশ সুপারের কাছে আমাদের আরেকটি আবেদন থাকবে- তিনি যাওয়ার বেলায় এমন সামাজিক অবক্ষয় ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বিপদগামিতা রোধে কিছু প্রদক্ষেপ নিয়ে যাবেন। তাহলে আমরা ব্যবসায়ীরাসহ পাবনার নৈতিকবান মানুষগুলো সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবে।’