পাবনায় ১০৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা

পাবনা সদর উপজেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডিপি) অন্তর্ভুক্ত স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিম-এর আওতায় পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) পাবনা সদর উপজেলার রাধানগর মজুমদার একাডেমী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা সদর উপজেলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাহ্‌মিদা আক্তার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাধানগর মজুমদার একাডেমী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও পাবনা সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আফজাল হোসেন । রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির টিম ম্যানেজার মো. ইজাজুল ইসলাম। এছাড়াও পাবনা সদর উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সংগঠকবৃন্দ  উপস্থিত ছিলেন ।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্যে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মো. আল-আমিন পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির বিষয়বস্তু এবং উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। এবং কর্মশালায় উপস্থিত সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, প্রযুক্তিগত কারণে আজকাল শিক্ষার্থীরা যেভাবে অনলাইনের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে তাতে করে শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। এই জায়গা থেকে বের হতে গেলে বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। এছাড়াও উপস্থিত সকলের প্রতি পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির যাবতীয় বিষয় সফল করতে সহযোগিতা কামনা করেন।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি তাহ্‌মিদা আক্তার বলেন, আমরা ছোট বেলায় একাডেমির বাইরের বই পড়তাম, কিন্তু এখন শিক্ষার্থীরা বাইরের বই পড়া ভুলে গেছে। তাই শিক্ষার্থীদের বই পড়ার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। এক্ষেত্রে উক্ত কর্মসূচি খুবই গুরুত্বপূর্ণ| আমরা যেমন খাবার হজম করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সফট ড্রিংকস খেয়ে থাকি তেমনি একাডেমির বইয়ের পাশাপাশি বাইরের বই আমাদের মনের খোরাক যোগাবে। তাই বই পড়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করতে সবাইকে অনুরোধ করে কর্মশালার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং কর্মসুচির সফলতা কামনা করেন।

উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র কর্মপরিকল্পনা, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া “পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন”এর মাধ্যমে তুলে ধরে টিম ম্যানেজার মোঃ ইজাজুল ইসলাম বলেন, উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার অন্যতম উদ্দেশ্য মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তাদের মন এবং বয়স উপযোগী বই পড়ায় আগ্রহী করে তোলা। পাঠাভ্যাসের প্রসার ও সুযোগ বৃদ্ধি করা। কর্মসূচি পরিচালনার জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন, বইপড়া শেষে মূল্যায়নের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি টেকসই ও কার্যকর  করার লক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বইপড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আজকের এই কর্মশালা। উন্মুক্ত আলোচনায় বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ এবং সংগঠকবৃন্দ অংশগ্রহন করেন।

কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে মো: হাফিজুর রহমান বলেন, অনলাইনের আগ্রসনী থাবার কারণে আমাদের ছেলে মেয়েরা বই পড়া বাদ দিয়ে অনলাইনে আসক্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। তাদেরকে বইমুখী করার জন্য সুন্দর সুন্দর বই পড়ার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। তিনি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের কথা স্মরণ করে বলেন, আমরা যদি নজরুল, রবীন্দ্রনাথের সাথে কথা বলতে চাই তাহলে তাঁদের বই পড়তে হবে। এবং কর্মশালা আয়োজনের জন্য বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সকলকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও পাবনা সদর উপজেলায় পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির সকল কাজে সার্বিক সহযোগিতা করার আশাবাদ ব্যক্ত করে কর্মশালায় অংশগ্রহণের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভাপতি মহোদয় কর্মশালা সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ