যৌতুকের দাবিতে পাবনার সদর উপজেলার ভাঁড়ারায় গৃহবধূ রুমানা পারভিনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় স্বামী মো. আব্দুল্লাহ ওরফে অকাতকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আসামিকে ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মিজানুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আব্দুল্লাহ ওরফে অকাত ভাঁড়ারা ইউনিয়নের পশ্চিম দামুয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ প্রামাণিকের ছেলে। রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে মৃত্যুদণ্ড আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয় এবং খালাসপ্রাপ্তদের মুক্তি দেয়ার আদেশ দেয়া হয়। আর নিহত রুমানা পারভিন একই গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালে ভালোবেসে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবি করে আসছিলেন স্বামী মো. আব্দুল্লাহ ওরফে অকাত। একাধিকবার টাকা দিলেও ঘটনার কয়েকদিন আগে আবারও যৌতুকের টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ২০১৪ সালের ৩০ অক্টোবরের গভীর রাতে ঘরে থাকা বন্দুক দিয়ে রুমানাকে গুলি করে হত্যা করেন অকাত। খবর পেয়ে পাবনার সদর থানা পুলিশ গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে।
এঘটনায় নিহতের বাবা মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ৪ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজকে রায় ঘোষণা করা হলো।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম ফরিদ উদ্দিন জানান, ‘রায়ে আমার মক্কেল ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি আমার মক্কেল সেখানে ন্যায় বিচার পাবেন এবং নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।
তবে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ট্রাইব্রুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুর রকিব। তিনি বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। আশা করি আইনি প্রক্রিয়া শেষে খুব দ্রুত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে।