পাবনা পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণের শুরুতেই ব্যাপক করাকরি আরোপ করেছে প্রশাসন। শুরুতে বাধা ও ব্যাপক জেরার মুখে মুখে পড়েছেন পৌরসভার মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু ও নৌকার এজেন্ট যুবলীগ নেতা শিবলী সাদিক।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুল কেন্দ্রের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
শিবলীর কাছে এজেন্টের কার্ড চাওয়া হয়। এসময় মেয়র মিন্টু উপস্থিত হন। এসময় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুইজনের কথা কাটাকাটি হয়।
এর আগে সকাল আটটায় নানা আতঙ্ক আর শঙ্কার মধ্য দিয়ে আলোচিত পাবনা পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। নির্বাচন ঘিরে বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কয়েক প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি মোতয়েন করা হয়েছে। এছাড়াও শহরের অলি-গলিতে টহল দিচ্ছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব ও ডিবি পুলিশ।
পাবনা সদর পৌর নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার কাওছার মোহাম্মদ জানান, সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহনের জন্য নেয়া হয়েছে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা আছে। এর বাইরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব সদস্য, আনসার সদস্য, স্ট্রাইকিং ফোর্স নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যেই উত্তাপ ছড়িয়েছে পাবনায়। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে আতঙ্ক বিরাজ করছে পুরো শহরজুড়ে। ইতোমধ্যেই দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
৩০ জানুয়ারির আলোচিত এই নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা যুবলীগের আহবায়ক আলী মুতর্জা সনি বিশ্বাস (নৌকা) এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শরিফ উদ্দিন প্রধান (নারকেল গাছ), বিএনপির মনোনীত জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক এডওয়ার্ড কলেজের ভিপি নূর মোহম্মদ মাসুম বগা (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত চৌধুরী মোহম্মদ মাহাবুবুল হক (লাঙ্গল) , ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত আবু বক্কর সিদ্দীক (হাতপাখা)।
এছাড়া জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ২০১৫ সালে নৌকার প্রার্থী মো. রকিব হাসান টিপু এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জমা দিলেও শেষ পর্যন্ত তিনি সরে গেছেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জমা দেয়া পাবনা পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি রকিব উদ্দিনের মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন।
উল্লেখ্য, পাবনা পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের ৩৯টি ভোট কেন্দ্রের ৩৪৬টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১ লাখ ১২ হাজার ২৪৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ পুরুষ কাউন্সিলর পদে ৭৪ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।