পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা কেন্দ্র করে আইয়ুব নবী ওরফ নাউদ নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার দায় নয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে দশ হাজার টাকা জরিমানা ও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
হত্যাকান্ডের ১১ বছর পর মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ (২য় আদালত) আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান মুন্নী এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইউসুফ আলী সরদার এবং আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আলহাজ্ব এডভোকেট এম এ মতিন।
সাজাপ্রাপ্তরা আসামি হলেন- সাঁথিয়ার ভিটাপাড়া গ্রামের সকিম উদ্দিনের ছেলে মো. আনার, মৃত ওহাবের ছেলে মো. শাহাদাত, মৃত জুলমতের ছেলে গকুল, মৃত কেরামত আলীর ছেলে মো. বাছেদ, আব্দুল রহিমের ছেলে মো. ফুলচাদ, আব্দুল রহিমের স্ত্রী মোছা. আলেয়া খাতুন, মৃত হযরত আলীর ছেলে মিন্টু আজম, শহীদ আলীর ছেলে খোকন মিয়া ও আব্দুল মালেকের ছেলে শামীম হোসেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন, পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিহত আইয়ুব নবী ওরফে নাউদের সঙ্গে আসামিদের নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে শত্রুতা ছিল। এর জেরে ২০১১ সালের ২৬ জুলাই রাতে আসামিরা আইয়ুব নবীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান, পরেরদিন ২৭ জুলাই আইয়ুব নবীর খন্ডিত মৃতদেহ ভিটাবাড়ি নদীর পানিতে ও নৌকার উপর পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। অপরদিকে একই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোছাঃ সুলতানা বেগম বাদী হয়ে আদালতে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উভয় মামলার তদন্তের শেষে একই বছরের ২৪ নভেম্বর ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। মামলা চলাকালীন সময়ে এক আসামির মৃত্যু হয়। দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে আজকে রায় ঘোষণা করা হলো।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইউসুফ আলী সরদার বলেন, এটা একটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। সাক্ষ্য ও তদন্তে অভিযোগ সন্দেহাতিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আদালত তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছেন। আমরা এই রায়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। এর মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতীয়মান হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ মতিন বলেন, সাক্ষ্য ও তদন্তে অভিযোগগুলো করতে রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। তারপরেও এই রায় দেয়া হয়েছে। আমার মক্কেলরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ফলে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। সেখানে আমার মক্কেলরা ন্যায় বিচার পাবেন ইনশাআল্লাহ।