পাবনা পৌর এলাকায় ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি ও বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রচারণা ছাড়াই এক ওয়ার্ডের পণ্য অন্য ওয়ার্ডের বিতরণের ফলে অনেকেই পাচ্ছেন না, আবার অনেকেই হয়রানি হচ্ছেন। এছাড়াও যোগসাজস ও কৌশলে অনেক কার্ডধারী গ্রাহকদের কাছে পণ্য বিক্রি না করে পরবর্তীতে সেই পণ্য উচ্চ মূল্যে দোকানদারদের কাছে বিক্রি অভিযোগ উঠেছে।
পাবনা পৌর এলাকার ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের জন্য নির্ধারিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পণ্য বিক্রির দায়িত্বকপ্রাপ্ত তদারকি (ট্যাগ) অফিসারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ভুক্তভোগী কার্ডধারী ও এলাকাবাসী।
তারা অভিযোগ করেন, ‘আগে ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের পণ্য কাশিপুর মোড় ও মানসিক হাসপাতালের সামনে দেয়া হতো। কিন্তু ১৩ নং ওয়ার্ড তাদের পণ্য বিক্রি ১৩ নং ওয়ার্ডেই বিক্রি করছে। আর বাকি দুই ওয়ার্ডের পণ্য বিক্রি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ ওয়ার্ডের চক ছাতিয়ানির মোড়ে। বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে কার্ডধারীদের মাঝে পণ্য বিক্রি চলছে, কিন্তু ১৪ নং ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি ও কার্ডধারীরা জানেনই না। অনেকেই কাশিপুর মোড় ও মানসিক হাসপাতালের সামনে এসে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এভাবে অনেককে পণ্য না দিয়ে এবং কার্ডধারী মৃত অনেক ব্যক্তির অবশিষ্ট পণ্য অনিয়মতান্ত্রিকভাবে উচ্চ মূল্যে বাহিরে বিক্রি করে দেয়া হয়।
১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ এইচ এম আরেফিন রুবেল বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের মানুষ জানেই না আজকে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। ফলে অনেক কার্ডধারী মানুষ পণ্য পান না। এভাবে পণ্য বিক্রি না করে পরবর্তীতে সব পণ্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও ট্যাগ অফিসার যোগসাজসে বাহিরে বিক্রি করছেন। আমার ওয়ার্ডের পণ্য আমার ওয়ার্ড দেয়া হলে এই অনিয়মের সুযোগ থাকবে না।’
এবিষয়ে ঠিকাদার তানভীর ফয়সাল রিয়াদ বলেন, ‘ডিসি ও ইউএনও অফিস থেকে আমাকে এখানেই বিক্রি জন্য নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে। এখান ছাড়া অন্য কোথাও পণ্য বিক্রির আমার সুযোগ নেই। আর এখানে ট্যাগ অফিসারের তত্তাবধানেই বিক্রি করি। অবশিষ্ট পণ্য বিকেলে ট্যাগ অফিসারের অনুমতিতেই সাধারণ গরীব-অসহায় মানুষের মাঝেই নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করি। অনিয়ম করে বিক্রি কোনও সুযোগ নেই।’
অনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার শামি আক্তার বলেন, ‘আসলে ওইখানে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। ফলে এই সমস্যা দেখা গেছে। এখানে কোনও অনিয়ম হয় না। গতকাল (মঙ্গলবার) অবশিষ্ট আমি ৪৩টা কার্ড নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সাধারণ গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছি। অনিয়মের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
এবিষয়ে পাবনা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাহমিদা আক্তার বলেন, ‘মাইকিং তো করা হয়েছে। আর টিসিবির পণ্য অন্য কোথাও বিক্রির সুযোগ নেই। কেউ যদি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে অবশ্যই আমি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’