চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ভিক্ষা করতে গিয়ে প্রতিবন্ধী মিলনের সঙ্গে পরিচয় পাবনার জাহিদুলের। পরিচয়ের কিছু দিন জাহিদুল মিলনকে পাবনার ঈশ্বরদীর বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেই বাড়িতেই পাওনা টাকা নিয়ে বৎসার জেরে ঘুমন্ত বন্ধুকে হত্যা করেন জাহিদুল।
গত ২৪ জুন ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুরের আওতাপাড়ার রহিমপুর গ্রামে আসামি জাহিদুলের বাড়ি থেকে প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক মিলন হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার দুপুর ১২টায় ঈশ্বরদী থানা কার্যালয়ের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) ফিরোজ কবির, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ হাদিউল ইসলাম ছিলেন উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও আলামত সংগ্রহ করে তিন দিনের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চার জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। এদের মধ্যে জাহিদুল ইসলাম ও শ্রী নিরঞ্জন চন্দ্র দাস আদালতে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। মামলার অন্য দুই আসামি হলেন জাহিদুলের স্ত্রী সামেলা ও ছেলে শাকিল। আটক আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, জাহিদুল মাসিক ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে মিলনকে দর্শনা হতে পাবনার চাটমোহরে নিজ বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন জাহিদুল। তার বাড়িতে নিরঞ্জন নামে আরও একজন ভাড়া থাকতেন যাকে ভিক্ষার কাজে লাগাতেন।
দুই মাস ভিক্ষা করার পর জাহিদুলের কাছে ভিক্ষুক মিলনের পাওনা দাঁড়ায় ২০ হাজার টাকা। মিলন টাকা দাবি করলে ৫ হাজার দিয়ে বাকি টাকা দিতে কালক্ষেপন করে জাহিদুল।। এতে জাহিদুল ও মিলনের বাগবিতণ্ডা হয়।
এরপরই জাহিদুল ও তার স্ত্রী সামেলা, ছেলে শাকিল ও নিরঞ্জন ভিক্ষুক মিলনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৪ জুন রাত ১টার দিকে জাহিদুলের ছেলে শাকিলের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা মিলনকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে জাহিদুল, নিরঞ্জন মিলে গলাটিপে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্লেড দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করলে মিলন নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরে ভ্যানের ওপর শুইয়ে মিলনকে বিদ্যুৎস্পষ্টে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
পরে আসামিরা ভ্যানের ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার সময় ভিক্ষুক মিলন বিদ্যুৎস্পষ্টে মারা গেছে বলে প্রচার করে।
এ অবস্থায় ২৪ জুন সকালে মিলনের লাশ ভ্যানে করে চাটমোহর বাজার থেকে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুরের আওতাপাড়ার রহিমপুরে আসামি জাহিদুলের বাড়িতে নিয়ে আসে। লাশ নিয়ে আসার সময় ভ্যানের সঙ্গে ছিলেন আসামি নিরঞ্জন ও সাহেলা।