চৈত্র-বৈশাখ-জৈষ্ঠ্যের শুষ্ক মৌসুমের আগেই প্রমত্ত পদ্মা ধু-ধু মরুভূমি হিসেবে পরিণত হচ্ছে। এখনই পদ্মা নদী পানিশূন্য। ইতোমধ্যেই অনেক জায়গায় পানি শুকিয়ে ধু ধু বালুর মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে একসময়ের ক্ষরস্রোতা পদ্মা।
পদ্মার পাবনার বিভিন্ন পয়েন্ট ভূখণ্ডে পদ্মায় পানি নেই বললেই চলে। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় পাবনা-কুষ্টিয়া-রাজবাড়ীতে চলাচল করা খেয়া নৌকা চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।
আর পানি না থাকায় নদীতে মাছ ধরতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছে পদ্মা পাড়ের জেলে পরিবারগুলো। পদ্মা নদীর বালুর স্তরে স্তরে আটকে আছে মাঝিদের নৌকা। বেশিরভাগ ধু ধু বালুচরে চলছে গরুর গাড়ি।
জেলা সুজানগর উপজেলার পদ্মাপাড়ের সিংহনগর গ্রামের বাসিন্দা ডা. লিয়াকত আলী বলেন, এক সময় প্রচণ্ড স্রোতস্বিনী প্রমত্ত পদ্মার গর্জনে মাঝি মাল্লারা পদ্মার বুকে খেয়া নৌকা চালাতে সাহস পায়নি। জেলেরা সাহস পায়নি তার মাছ ধরা নৌকা চালাতে। এমনকি অনেক সময় পদ্মার বিশাল ঢেউ আর ভয়ঙ্কর গর্জনের মুখে ফেরি এবং স্টিমারের মতো ভারি নৌ-যান পর্যন্ত চালানো সম্ভব হয়নি। কিন্তু কালের আবর্তনে সেই প্রমত্ত পদ্মা এখন শুষ্ক মৌসুম আসার আগেই একদম নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। বিভিন্ন স্থানে জেগে উঠেছে ধু-ধু মরুভূমি বালু চর।
পদ্মা পাড়ের নারুহাটি গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি মেম্বার খলিলুর রহমান বলেন, সুজানগরের সাতবাড়ীয়া পদ্মা নদীর খেয়াঘাট হতে রাজবাড়ীর পাংসা উপজেলার হাবাসপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত পদ্মা নদীর বেশ কয়েক জায়গায় চর জেগে উঠেছে। এতে খেয়া নৌকা চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।
খেয়া নৌকার মাঝি স্বপন কুমার বলেন, বর্ষা মৌসুমে সাতবাড়ীয়া হতে হাবাসপুর পর্যন্ত ৬ কি.মি. পদ্মা নদী পার দিতে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগতো। আর বর্তমানে পদ্মায় চর জেগে উঠায় অনেক পথ ঘুরে যাওয়ার কারণে ১ ঘন্টারও বেশি সময় লাগছে। সেকারণে যাত্রীরা দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের নদীগুলোর পানিপ্রবাহের প্রায় ৯০ শতাংশ আসছে ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে। এসব নদীর উজানে ভারত বাঁধ দেয়ার কারণে দেশের অভ্যন্তরে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ আসতে পারছে না। অন্যদিকে বর্ষায় পানিপ্রবাহ বেশি হলে তা ধরে রাখার মতো কার্যকর ব্যবস্থা দেশের নদীগুলোতে নেই।