দুবলিয়া মেলায় জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ধাওয়া, কর্তৃপক্ষের ‘অস্বীকার’

পাবনা সদর উপজেলার শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী দুবলিয়া মেলাকে কেন্দ্র করে চলছে জুয়ার আসর। জুয়াকে কেন্দ্র জোয়ারুদের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। মাঝে মধ্যেই চলছে পুলিশের ধাওয়া। পুলিশ ধাওয়া দিলেও রহস্যজনক ভূমিকায় মেলার আয়োজক কমিটি।

শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে বন্ধ হয়ে যাওয়া দুবলিয়া হাজি জসিম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অংশে মেলার পেছনে বেশ কিছুক্ষণ ধরে জুয়ারুদের ধাওয়া দিতে দেখা যায় পুলিশকে।

স্থানীয়রা জানান, মেলা শুরুর পর থেকেই কলেজ অংশের পেছনে রাতের আঁধারে চলে হাউজিং জুয়া। এর সঙ্গে মেলার আয়োজক কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য জড়িত। তাদের ছত্রছায়ায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এইসব জুয়া খেলা। জুয়া নিয়ে মেলার আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন খানের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সিয়াম খান আরেক ছাত্রলীগকর্মী কাওছারকে মারধর করে। এনিয়ে উত্তেজনা চলছিলেও নীরব ভূমিকায় আয়োজক কমিটি।

এ বিষয়ে আয়োজক কমিটির সভাপতি ও চরতারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিক খান এবং কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেননি।

তবে এর আগে তারা জুয়া খেলা বিষয়টি অস্বীকার করেন। দুবলিয়া হাজি জসিম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অংশে অবৈধভাবে বসানো মেলা ও জুয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন রইস উদ্দিন খান। এই আওয়ামী লীগ নেতা চলতি বছরের এপ্রিলে র্যাবের হাতে ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হয়েছিলেন।

এবিষয়ে আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘(জুয়ারূ) বসতে দেয়ার কোনও সুযোগ নেই। এব্যাপারে আমরা খুবই শক্ত। কেউ যদি এমনটা চেষ্টা করে তাহলে তো আমাদের প্রতিহত করা লাগবেই। কেউ গোপনে বসার চেষ্টা করলে আমাদের পুলিশ ব্যবস্থা নিবেন।

তবে বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না মেলার দায়িত্বে থাকা দুবলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, এই ব্যাপারে আমি এখন পর্যন্ত কিছুই জানি না। সেখানে আমাদের ফোর্স দেওয়া আছে তারাও আমাদেরকে কিছু বলেনি। তবে আমরা জুয়া খেলার বিষয়টি নিয়ে ১০০% তৎপর আছি।

এর আগে অনুমোদন না থাকায় মেলা উদ্বোধনের ৫ দিন পর বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে পাবনা সদর সহকারী ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ড) মো. শওকত মেহেদী সেতুর নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের এক টিম অভিযান চালিয়ে মেলার এই অংশ বন্ধ করে দিয়েছে।

বন্ধের পর কলেজ অংশের এই মেলা নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ এবং মেলা কমিটির সভাপতি স্থানীয় চেয়ারম্যানের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এই অবৈধ মেলার জন্য চরতারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির সভাপতি সিদ্দিক খানকে দায়ী করলেও সিদ্দিক খান পাল্টা কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের দায়ী করেন।

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ