তীব্র লোডশেডিং পাবনায়, পরিস্থিতি ‘আরও ভয়াবহ’ হতে পারে

ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পাবনা শহরসহ গোটা জেলা। রাত ও দিনে আধা ঘণ্টা-এক ঘণ্টার পরপরই বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ছে মাকের্ট-শপিংমলগুলোতে। শপিংমলগুলো দিনের বেশিরভাগ সময়ই অন্ধকার থাকছে, ফলে তীব্র গরমে ক্রেতারা দোকানে ভিড়ছেন না। এভাবে  লোডশেডিং অব্যাহত থাকলে ঈদ বাজারে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

পাবনার নেসকো লিমিটেড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত দুইদিন ধরে গোটা জেলাতেই এমন লোডশেডিং হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন- এটা প্রায় সারা বাংলাদেশেই হচ্ছে। মূলত জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে, ফলে ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। তবে অবস্থা স্বাভাবিক হতে কত সময় লাগবে তা জানাতে পারেননি কেউ। আজ-কালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করা না গেলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে পাবনা জেলা ভ্যাবসা গরম পড়ছে। প্রচণ্ড গরমে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হচ্ছে না। এরপর আবার এমন লোডশেডিং। গরম আর লোডশেডিংয়ে সাধারণ মানুষের জীবনও দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। তবে লোডশেডিংয়ের বড় প্রভাব পড়েছে মাকের্ট-শপিংমলগুলোতে।

পাবনা নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ পাবনা বার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, ঈদের আছে আর মাত্র কয়দিন। এই সময়ে বেচাকেনার ধুম পড়ে। কিন্তু তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ে দোকান প্রায় সময়ই ফাঁকা থাকছে। এর ওপর আবার রাত ৯-১০টার মধ্যে দোকান বন্ধ করতে হবে। এভাবে চলছে আমরা ব্যবসা করবো কিভাবে? আধা ঘণ্টা এক ঘণ্টা পরপরই বিদ্যুৎ এমন নাজেহাল করছে।

পাবনা নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল হক পাবনা বার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, ‘আমরা চাহিদা মতো বিদ্যুৎ পাচ্ছি না ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অতিরিক্ত লোডশেডিং হচ্ছে। আমাদের নেসকোতে চাহিদা রয়েছে ২৫ মেগাওয়াট, যেখানে ৬০-৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।’

পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. আকমল হোসেন পাবনা বার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে, ফলে সারা দেশের মতো পাবনাতেও লোডশেডিং হচ্ছে। পাবনা-১ এলাকায় গতকাল রবিবার (৩ জুলাই) দিনে চাহিদা ছিল ৫২ মেগাওয়াট যেখানে পেয়েছি মাত্র ২৬ মেগাওয়াট, আবার রাতে চাহিদা ছিল ৮৫ মেগাওয়াট, সেখানে আমরা পেয়েছিলাম মাত্র ৪৮ মেগাওয়াট।’

পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. মজিবুল হক পাবনা বার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, ‘আমার পাবনা-২ এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে দৈনিক ৮৫ মেগাওয়াট, যেখানে পাচ্ছি মাত্র ৬০ মেগাওয়াট। আমরা ওপর মহলে যোগাযোগ করেও কোনও সমাধান আপাতত পাচ্ছি না। তারা বলছে- উৎপাদন কমে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় তো আরও ভয়াবহ অবস্থা, সেসব জায়গায় চাহিদার অর্ধেকও দিতে পাচ্ছে না।’

তবে আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কবে স্বাভাবিক হবে- ওপর থেকে এর কোনও কিছু বলছে না। তারা বলছেন- গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ, আন্তর্জাতিকভাবে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে আমদানিও করা যাচ্ছে না। গ্যাসের সরবরাহ আর উৎপাদন বাড়াতে না পারলে আরও খারাপ পরিস্থিতি হতে পারে। তবে সরকার চেষ্টা করছে গ্যাসের সরবরাহ আর উৎপাদন বাড়াতে।’

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ