বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ মর্নিং বার্ড থেকে ১৩ ঘন্টা পর উদ্ধার হওয়া সুমন বেপারি তীব্র মাথা ব্যথা নিয়ে ফের স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (মিডফোর্ড) ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) রাত ৮ টার দিকে তাকে মুন্সীগঞ্জ থেকে মিডফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা। সুমন বেপারির ভাতিজা সাকিব বেপারি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বাড়িতে যাবার পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। আজকে মাথা ব্যথা তীব্র হওয়ায় সন্ধ্যার দিকে সুমন বেপারিকে নিয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে নিয়ে রওয়ানা হন। রাত ৮ টার দিকে তাকে মিডফোর্টে আনা হয়।’
মাথা ব্যথা ছাড়াও সুমন বেপারি অসলংগ্ন কথা বলছেন, চুপচাপ থাকছেন বেশিরভাগ সময়। তাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
এর আগে সুমন বেপারীর বক্তব্যকে অসংলগ্ন বলে মন্তব্য করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। উদ্ধারের পর মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন সুমন। সেখান থেকেই গতকাল বুধবার তদন্ত কমিটির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন সুমন।
তদন্ত-সংশ্নিষ্ট একটি সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, সুমনের বক্তব্য কমপক্ষে ৩০ মিনিট ধরে রেকর্ড করা হয়েছে। সুমন বলেছেন, তিনি লঞ্চে ঘুমিয়ে ছিলেন। ডুবে যাওয়ার বিষয়টি তার মনে পড়ছে না। উদ্ধারের পর সবকিছু জানতে পারেন। তিনি বলেন, ভেতরে হাঁটুপানি ছিল। পুরো রুমটা অন্ধকার ছিল। তার জ্ঞান ছিল না। ডুবে যাওয়ার সময় তার পেটেও পানি চলে যায়।
তদন্ত কমিটির প্রধান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলাম সুমনের বক্তব্য নেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে গণমাধ্যমকে বলেন, ১৩ ঘণ্টা ধরে ডুবে যাওয়া লঞ্চের ভেতরে তিনি কীভাবে থাকলেন, তার বক্তব্যে তা স্পষ্ট হয়নি। সংশ্নিষ্ট অনেকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
গত সোমবার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বুড়িগঙ্গার শ্যামবাজার মযূর-২ নামক একটি বড় লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায় মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা ছোট লঞ্চ মর্নিং বার্ড। ঘটনার পর কয়েকজন জন যাত্রী সাঁতরে উঠলেও এখন এই ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৩৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার প্রায় ১৩ ঘন্টা পর যখন লঞ্চটি টেনে উপরের দিকে তোলার চেষ্টা করে উদ্ধারকারীরা, তখন সুমন বেপারী পানির ভেতর থেকে হঠাৎ ভেসে ওঠেন।
পরবর্তীতে তাকে মিডফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হয়। মুন্সীগঞ্জের এই ফল বিক্রেতা দুদিন সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে যান। তবে স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তিনি ফের বৃহস্পতিবার মিডফোর্ড হাসপাতালে আসেন। এই ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় নৌ পুলিশ একটি মামলা করেছে।