করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা নিয়ে রিপোর্ট জালিয়াতির মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইন ওরফে সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১৩ জুলাই) তেজগাঁও থানা পুলিশের ৪ দিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমান শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) ফরিদ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘তেজগাঁও থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করে সাবরিনাকে আদালতে হাজির করেন। সাবরিনার পক্ষে আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক সাবরিনাকে ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠান।’
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ডা. সাবরিনাকে আদালতে নিয়ে ৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয় বলে জানিয়েছিলেন তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন।
ডা. সাবরিনা জেকেজির প্রধান নির্বাহী আরিফ চৌধুরীর চতুর্থ স্ত্রী। পারিবারিক নাম সাবরিনা শারমিন হুসাইন হলেও তিনি ডা. সাবরিনা আরিফ নামেই পরিচিত।
গতকাল রবিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগীয় উপকমিশনারে (ডিসি) কার্যালয়ে ভুয়া সার্টিফিকেট দেয়াসহ নানা বিষয়ে ডা. সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরইমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলাও করেছে।
সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ভঙ্গের অভিযোগে গতকালই ডা. সাবরিনাকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা জানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে করোনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে এক ভুক্তভোগীর করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন সাবরিনার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীও।
এর আগে গত ২৩ জুন জেকেজিতে অভিযান চালায় তেজগাঁও থানা পুলিশ। অভিযানে প্রতারণার মূল হোতা ও জেকেজির প্রধান নির্বাহী আরিফ চৌধুরীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তেজগাঁও থানা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গত এপ্রিল মাস থেকে জেকেজি থেকে প্রায় ২৭ হাজার রোগীকে করোনার টেস্টের রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআর-এর মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা না করেই প্রতিষ্ঠানটির ল্যাপটপের মাধ্যমে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে রোগীদের দেয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জব্দ করা ল্যাপটপ থেকে এসবের প্রমাণও পেয়েছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ জানিয়েছে, জেকেজির মাঠকর্মীরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে বাংলাদেশি প্রত্যেক রোগীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নিতো। আর বিদেশি রোগীদের কাছ থেকে নিতো ১০০ ডলার করে।