পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমরায় আওয়ামী লীগকর্মী আব্দুল মতিন হত্যার ঘটনায় নাগডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান হাফিজসহ হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
বুধবার (৮ জুন) বেলার ১১টার দিকে সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে পরিষদের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল সাঁথিয়া থানা, বাজার ও প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাঁথিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে নাগডেমড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এসময় তারা এ ঘটনায় গ্রেফতার হাফিজের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, হাফিজ চেয়ারম্যান একজন চিহ্নিত জামায়াত-বিএনপি পরিবারের লোকজন। তার অত্যাচারে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরাসহ সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। তার মতো চিহ্নিত সন্ত্রাসীর ফাঁসি না হলে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন থামবে না। হয়তো আবারও কোনও মতিন বলি হতে পারে হাফিজের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে।
মানববন্ধনে হারুন অর রশিদ বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগেই আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু বার বার চেষ্টা করেও পারেনি। নির্বাচনের সময় আমি নৌকার প্রার্থী হওয়ায় আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। এরপরও থেকে বিভিন্ন সুয়োগে আমাকে হত্যা চেষ্টা করেছি। সেদিন (শনিবার) মূলত আমাকে হত্যা করাই তার মূল উদ্দেশ্যে ছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে আমি সেদিন ছিলাম না। আমাকে না পেয়ে তারা আমার সহকারী মতিনকে কুপিয়ে হত্যা করে। আর আমার ভাইকে হত্যার চেষ্টা করে।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগডেমড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস শুকুর মণ্ডল, ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম, ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক, আ.লীগে নেতা উজ্জল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার (৪ জুন) রাতে মেয়ে-জামাইয়ের বাড়ি থেকে বাড়ি ফেরার পথে সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের বাড়ির কর্মচারী ও আ.লীকর্মী আব্দুল মতিনকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় হারুন অর রশিদের ভাই জুয়েল রানাকে কুপিয়ে হত্যা করতে চাইলে তিনি পাশের ইছামতি নদীতে ঝাঁপে দিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এঘটনায় হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান হাফিজকে প্রধান আসামি করে ১৮-১৯ জনের নামে সাঁথিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরেরদিন বিকেলেই উপজেলার সোনাতলা গ্রাম থেকে অভিযান চালিয়ে এক সহযোগীসহ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।