তদন্তে পাবনার সেই স্কুলের ঘটনার সত্যতা মিলেছে, ব্যবস্থা শিগগিরই

পাবনার বেড়া উপজেলার ঢালারচর ইউনিয়নের চর দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা অবমাননা, শহীদ মিনারের বেহাল অবস্থা ও দুপুর হলেই স্কুল বন্ধসহ নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনার সত্যতা পেয়েছে বেড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসের তদন্ত কমিটি। ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছে বেড়া উপজেলা শিক্ষা অফিস।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন এবং বেড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন।

বেড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা তদন্ত করেছি। তদন্তে জাতীয় পতাকা অবমাননার সত্যতা পেয়েছি। শহীদ মিনারের অবস্থাও বেহাল। আর স্কুল অনিয়মিত হয় সেটারও সত্যতা পাওয়া গেছে। এসব বিষয় উল্লেখ্য করেই আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছি। এখন তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।’

ঘটনার আরও অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা অফিসের তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। এছাড়াও আমরাও একটি তদন্ত করবো। আশা করি শিগগিরই এর বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা হবে।’

এবিষয়ে চর দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিউল আলম সোহেল বলেন, ‘জাতীয় পতাকার দাযিত্ব ছিল দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজার। রাজার বাবা কালাম মেম্বারের সঙ্গে আফাজ মেম্বারের স্থানীয়ভাবে ঝামেলা চলছে। হয়তো তারা এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।’

উল্লেখ্য, গত ৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে সরেজমিন পরিদর্শন করে চর দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনার চিত্র পাওয়া যায়। দুপুর হলেও স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। সেদিন দুপুর ২টা ১০ মিনিটেই স্কুলের একমাত্র ভবন তালাবদ্ধ পাওয়া গিয়েছিল। তালাবদ্ধ ভবনের রুমগুলোতে চলছিল ফ্যান ও লাইট। ভবনের ক্যাচিগেটের পাশে বারান্দার মেঝেতে অবহেলায় পড়েছিল ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া জাতীয় পতাকা। ভবনের পাশেই ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারটিও ভেঙে পড়ে আছে। রুমের জানালাতে ঝুলছিল পাট। তৎক্ষণাত ছুটে এসে ঘটনার হাতেনাতে সত্যতা পান বেড়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘১০-১১টার দিকে স্কুলে আসেন শিক্ষকরা। ১-২ ঘণ্টার মধ্যে দুই-তিনটা ক্লাস নিয়েই স্কুল ছুটি দিয়ে দেন শিক্ষকরা। ঠিক মতো স্কুলটা বন্ধও করে না। ফ্যান-লাইট রাতদিন ২৪ ঘণ্টা অটো চলে। মাঝে মাঝে পতাকাতো মাঠের মধ্যে গড়াগড়ি করে। এসব কেউ দেখার নেই। কেউ এখানে আসে না। তারা প্রতিবাদ করলে শিক্ষকরা বলেন- ‘আপনারা বেশি বেশি করে অভিযোগ করেন যাতে এখান থেকে আমাদের বদলি করে দেয়।’

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ