কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন কী এবং কেন?

বিশ্বজুরে এক ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে নিয়ন্ত্রণ আসলেও অন্যান্য দেশে ব্যাপক আকারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ১৫৮ জনের। শুধু চীনেই মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ২২৬। চীনের বাইরে মারা গেছে ৩ হাজার ৯৩২ জন।  এতে বিশ্বব্যাপী প্রচণ্ড আতঙ্ক ও ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

আর বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম আক্রান্ত রোগী শনাক্তের এই মরণঘাতি ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ছে। ফলে দেশের মানুষের মাঝে করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জ্বর ও সর্দি কাশি বা করোনা ভাইরাসের উপসর্গ থাকলে তাকে ‘আইসোলেশন’ ও ‘কোয়ারেন্টাইন’ পাঠানো হচ্ছে। ফলে ‘আইসোলেশন’ ও ‘কোয়ারেন্টাইন’ শব্দ দুটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে উচ্চারিত হচ্ছে এ রোগের ক্ষেত্রে। তবে এ দুটি বিষয় কী তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

এবিষয়ে বৈজ্ঞানিক ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এছাড়াও  রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটও (আইডিসিআর) এর ব্যাখ্যা দিয়েছে। তারা বলছেন, আইসোলেশন আর কোয়ারেন্টাইন দুটি ভিন্ন বিষয়।

কোয়ারেন্টাইন কী? 

আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ মনে হলেও সংক্রামক রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন এমন ব্যক্তিকে জনসমাগম থেকে আলাদা করে চিকিৎসকের নজরদারিতে রাখার নাম হলো কোয়ারেন্টাইন। সে সুস্থ হতে পারে, আবার নাও পারে, তার মধ্যে হয়তো জীবাণু আছে কিন্তু তার মধ্যে কোনো ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়নি- এমন ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।

কোয়ারেন্টাইনের সময়কাল নির্ভর করে সংক্রামক রোগ জীবাণুর ছড়িয়ে পড়ার সময়কালের ওপর। উদাহরণস্বরূপ, ইবোলা রোগের সময় কোয়ারেন্টাইনের সময়কাল ছিল ২১ দিন।

করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে একজন মানুষকে প্রাথমিকভাবে ১৪ দিন এভাবে বিশেষ ব্যবস্থায় রাখা হয়। ১৪ দিন পর্যন্ত কাউকে কোয়ারেন্টাইন করে রাখলে যদি তার ভেতরে জীবাণু থাকে তাহলে উপসর্গ দেখা দেবে। কোয়ারেন্টাইন থেকে লক্ষণ প্রকাশ না হলে তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ বলা হয়। কোয়ারেন্টাইনে রাখা অবস্থায় উপসর্গ দেখা দিলে আইসোলেশনে নিয়ে যেতে হবে।

আইসোলেশন কী?

আইসোলেশন হচ্ছে- সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ও অসুস্থ ব্যক্তিদেরকে সুস্থ ব্যক্তিদের থেকে আলাদা করে রাখার প্রক্রিয়া। সংক্রমণ রোধে অসুস্থ রোগীদেরকে আইসোলেশনে রাখা হয়। কারো মধ্যে যখন জীবাণুর উপস্থিতি ধরা পড়ে বা ধরা না পড়লেও তার মধ্যে উপসর্গ থাকে তখন তাকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করাই হলো আইসোলেশন।

রোগীর হাঁচি-কাশি, মল-মূত্র অন্য কারো সংস্পর্শে যাবে না তাই বিশেষ এই পদ্ধতি। জীবাণু যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, এজন্য রোগীকে যত রকম ব্যারিয়ার দেওয়া সম্ভব, আইসোলেশনে তা দেওয়া হয়।

বলা যায়, আইসোলেশন হচ্ছে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য, আর কোয়ারেন্টাইন হচ্ছে সুস্থ বা আপাত সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য। 

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ