শুরু থেকেই করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের মাধ্যম নিয়ে বিতর্ক চলছে। কিন্তু মাধ্যম স্বীকৃত হলেও কয়েকটি মাধ্যম নিয়ে বিতর্ক আছে। এর মধ্য অন্যতম ছিল বায়ুবাহিত হওয়া।
মরণঘাতি এই ভাইরাসটি বায়ুবাহিত হয়- বিশ্বে বিভিন্ন গবেষক ও প্রতিষ্ঠান এটা দাবি করলেও বিশ্ব সংস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও সেটা স্বীকৃত দেয়নি। ফলে সেটি নিয়ে বিতর্ক থেকেই যায়।
অবেশেষে সেই বিতর্কের অবসান ঘটালেন সংস্থাটির সংক্রমণ রোধ এবং নিয়ন্ত্রণের বিভাগের প্রধান বেনেডেটা অ্যালেগ্রানজি বলেন, ‘করোনার বায়ুবাহিত হওয়ার নজির আছে। কিন্তু সেটি সুনির্দিষ্ট নয়। করোনার বায়ুবাহিত সংক্রমণ হতে পারে নির্দিষ্ট স্থানে- বিশেষ করে চাপা জনাকীর্ণ পরিবেশে। এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।’
অথচ কদিন আগেই বিশ্ব সংস্থা সংস্থাকে চিঠি লিখে এই বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন বিশ্বের ২৩৯ বিজ্ঞানী। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা বিজ্ঞানীদের বায়ুবাহিত বিষয়ক তথ্য উড়িয়ে দেন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রয়টার্সের কাছে বায়ুবাহিত হওয়ার কথা স্বীকার করেও তাদের ওয়েবসাইটে এখনও (বুধবার পর্যন্ত) আগের তথ্য দেয়া আছে।
এর আগে করোনার বায়ুবাহিত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. উজ্জ্বল কুমার মল্লিক।
সম্প্রতি তিনি বলেছিলেন, ‘করোনা ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে জলকণা হিসেবে ছড়িয়ে থাকতে পারে। বায়ুবাহিত ভাইরাস ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র জলকণার মাধ্যমে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় প্রবাহিত হয়।’
‘অনেকে বলছেন যে তারা বাইরে বের হচ্ছেন না; তবু বাসায় থেকে সংক্রমিত হচ্ছেন। অসুস্থ মানুষের ড্রপলেটের জলকণাগুলো যখন ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র হয়, তখন বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এজন্য এখন আমাদের ঘরের ভেতরেও সতর্ক থাকা উচিত।’
মহামারীর ক্ষেত্রে এই বায়ুবাহিত বা এয়ারবর্ন ট্রান্সমিশন খুব গুরুত্বপূর্ণ। জনাকীর্ণ পরিবেশের বায়ুচলাচল ব্যবস্থা খারাপ হলে দ্রুততম সময়ে অনেক মানুষ সংক্রমিত হতে পারেন। তাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলেও ঘরের ভেতরে মাস্ক প্রয়োজন হতে পারে। তখন স্কুল, নার্সিং হোম, বাসাবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাতাস চলাচলের নতুন শক্তিশালী ফিল্টারের প্রয়োজন পড়তে পারে।