‘কঠোর লকডাউনে’ মাঠে নামছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি

সারাদেশে সোমবার (২৮ জুন) থেকে এক সপ্তাহের জন্য কড়াকড়ি কঠোর লকডাউন দেবে সরকার। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কাজ করবে পুলিশ, বিজিবি। একই সঙ্গে মাঠে নামছে সেনাবাহিনীও।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, আগামীকাল প্রজ্ঞাপন জারি। এক সপ্তাহ পর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

কোভিড ১৯ সংক্রমণ রোধকল্পে আগামী সোমবার ২৮ জুন ২০২১ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সারাদেশে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে।

এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সকল সরকারি বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে বলে তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জরুরী পন্যবাহী ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন শুধু চলাচল করতে পারবে। জরুরী কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। গণমাধ্যম এর আওতা বহির্ভূত থাকবে।

এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত আদেশ আগামীকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা হবে।

এর আগে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিনের পূর্ণ ‘শাটডাউনের’ সুপারিশ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

কোভিড কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ জানান, শাটডাউন মানে হচ্ছে সবকিছু বন্ধ থাকবে, শুধু জরুরি সেবা ছাড়া। অফিস-আদালত, বাজার-ঘাট, গণপরিবহণসহ সব বন্ধ থাকবে। সবাই বাসায় থাকবে। এমনটাই জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ।

তিনি বলেন, জরুরি সেবা বলতে ওষুধ, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম ছাড়া সবকিছু দুই সপ্তাহ বন্ধ করে মানুষ যদি এই স্যাক্রিফাইস-কষ্টটুকু মেনে নেয়, তাহলে আগামীতে ভালো হবে।

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ জানান, দিল্লি এবং মুম্বাইতে শাটডাউন দিয়ে ফলাফল পেয়েছে। সেখানে ৬ সপ্তাহ গণপরিবহন বন্ধ ছিল, এছাড়া দিল্লিতে আরও ৩ সপ্তাহ ছিল। দিল্লিতে প্রতিদিন একসময় ২৮ হাজার শনাক্ত হতেন, কিন্তু এখন সেখানে ১৫০ শনাক্ত হচ্ছেন। মৃত্যুও কমে এসেছে।

কোভিড কারিগরি পরামর্শক কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ রোগের বিশেষ ডেল্টা প্রজাতির সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে ও দেশে ইতোমধ্যেই রোগের প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এই প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে সারা দেশেই উচ্চ সংক্রমণ, ৫০টির বেশি জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়। রোগ প্রতিরোধের জন্য খণ্ড খণ্ড ভাবে নেওয়া কর্মসূচির উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

এদিকে এক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, উনারা (জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি) সুপারিশ দিয়েছেন। আসলে আমাদের চারপাশে তো করোনা বেড়েছে। আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গাতে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছি এবং প্রতিদিনই আমরা সেটা পর্যবেক্ষণ করছি যে এটা বেড়ে যাচ্ছে। ৬ হাজার প্লাস হয়ে গেছে আজকে। তো জাতীয় পরামর্শক কমিটি যেটা দিয়েছে এটা সরকারের কাছে এসেছে। সরকার অবশ্যই এটাকে মূল্যায়ন করবে। আমরা দেখছি এটাকে কীভাবে আরও কঠোরভাবে এই পরিসরটিকে আরও বাড়াতে পারি তাদের পরামর্শগুলো দেখে।

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ