স্বেচ্ছায় অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় টেকনাফ থানার প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে চট্রগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার রাতে প্রদীপ কুমারসহ এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। অবরসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ারের দায়ের করা মামলায় আদালত এ পরোয়ানা জারি করে।
মামলায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর লিয়াকতকে প্রধান আসামি ও টেকনাফ থানার প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়।
ওসি প্রদীপ ও ইন্সপেক্টর লিয়াকত ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা।
এর আগে একই ঘটনায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত ৯ পুলিশ সদস্যসহ ১৭ জনকে প্রত্যাহার করেছে কর্তৃপক্ষ।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা রাশেদ খান। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত বুধবার দুপুরে সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়নকে (র্যাব) নির্দেশ দেন। এরপরই পুলিশ সদর দফতর ওসি প্রদীপকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় এবং এবিএম দোহাকে নতুন ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। একইদিন দুপুরে সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও পুলিশ প্রধান বেনজির আহমদ বিশেষ হেলিকপ্টারে কক্সবাজার পরিদর্শন করেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পর ওসি প্রদীপ কুমার দাস ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি এসেই তখনও জীবিত থাকা মেজর সিনহাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার শরীরে লাথি মারেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর একটি ‘ছাড়পোকা গাড়ি’তে তুলে মেজর সিনহাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।