টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাসের নির্দেশেই সেনাবাহিনীর স্বেচ্ছা অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে গুলি করেন বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী। শুধু তাই নয়, সিনহা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে উল্লাসে মেতে উঠেন লিয়াকত আলী।
বহুল আলোচিত মেজর সিনহা নিহতের ঘটনায় টেকনাফের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারহানার আদালতে দায়ের করা মামলার বাদী নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস এমন অভিযোগ তুলেছেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পর ওসি প্রদীপ কুমার দাস ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি এসেই তখনও জীবিত থাকা মেজর সিনহাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার শরীরে লাথি মারেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর একটি ‘ছাড়পোকা গাড়ি’তে তুলে মেজর সিনহাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গতকাল বুধবার মোট ৯ জনকে আসামি করে শারমিন শাহরিয়ার করা মামলায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর লিয়াকতকে প্রধান আসামি ও টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাসকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এ এস আই লিটন মিয়া, এ এস আই টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা।
এদিকে মেজর সিনহা নিহতের ঘটনায় গতকালই ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে প্রত্যাহার করে এবিএম দোহাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর আগেও টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলিসহ ২০ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা রাশেদ খান। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের কথা জানিয়ে সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে তল্লাশিতে বাধা দেন। পরে পিস্তল বের করলে চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।