জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে ‘কাঁচা বাদাম’ গানে ছাত্রীদের উদ্যম নাচের ঘটনায় পাবনার ঈশ্বরদীর মানিকনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে এ সংক্রান্ত গঠিত তদন্ত কমিটি। ফলে শাস্তি পেতে যাচ্ছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান ও পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আশরাফ মহলদার বাবুসহ অনুষ্ঠানের আয়োজকরা।
রবিবার (২৭ মার্চ) পাবনা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কমিটির আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে মানিকনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিন পরিদর্শনে যায় তদন্ত কমিটি। এসময় পাবনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মোসলেম উদ্দীনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে চলা এ তদন্তে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের জবানবন্দি নেয়া হয়। এতে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। এ বিষয়ে আগামীকাল সোমবার (২৮ মার্চ) লিখিত সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, আমরা ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এসেছিলাম। যারা অনুষ্ঠান পালনের দায়িত্বে ছিল, শিক্ষার্থীসহ কোন কোন শিক্ষক মঞ্চে উপস্থিত ছিলো এবং কারা কারা নাচে অংশগ্রহণ করেছে সকলের জবানবন্দি আমরা নিয়েছি। কেন এমন অনুষ্ঠান হলো, কীভাবে হলো এসব বিষয় নিয়ে তদন্ত কমিটির সকল সদস্যদের নিয়ে আলোচনা করে আজ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে রিপোর্ট প্রেরণ করা হবে। তারপর কর্তৃপক্ষ আগামীকাল ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে উপজেলা সলিমপুরের ‘মানিকনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘কাচা বাদাম’ ও ‘হিন্দি গানের’ সঙ্গে নেচে-গেয়ে জন্মদিন পালন করে। এ সময় বিদ্যালয়ের নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করা হলে তা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমালোচনার মধ্যে পড়ে। অনেকে ফেসবুকে নানা ধরনের মন্তব্য করেন। পরবর্তীতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই পেজটি থেকে ভিডিও ডিলিট করে দেয়।
তবে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে গত ২১ মার্চ প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশের প্রেক্ষিতে লিখিত জবাব দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান । ক্ষমা চেয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন- তার অনুপস্থিতে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সহকারী শিক্ষক মঞ্চে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটিয়েছেন।
তার লিখিত জবাবের পর পাবনা জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে গত বুধবার (২৩ মার্চ) বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও অনুষ্ঠানের উপস্থাপক রফিকুল ইসলাম রিপনকে সাময়িক বরখাস্ত করতে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।