আপনি করোনা আক্রান্ত বুঝবেন কীভাবে?

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যে এটিকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। তাই চারদিকে সবার মধ্যেই দেখা দিচ্ছে করোনা আতঙ্ক।

এই সময়েই আপনি খেয়াল করলেন আপনার শরীর সামান্য গরম হয়ে আসছে। জ্বর জ্বর ভাবও চলে এসেছে। সেই সঙ্গে গলা ব্যথাও রয়েছে কিছুটা। আবার শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে বাসা-অফিস-রাস্তা বা রেস্তোরাঁতেও করোনাভাইরাস নিয়ে আলোচনা শুনতে শুনতে আপনার মনেও আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। কিন্তু ঠিক কোন কোন উপসর্গ দেখা দিলে করোনায় আক্রান্ত বলে মনে করবেন?

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আপনার যদি এ রকম উপসর্গ দেখা দেয়, তবে যে কোনও সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা প্রাথমিক পরীক্ষা করে যদি মনে করেন যে, আপনার শরীরে যে উপসর্গ গুলি দেখা যাচ্ছে তার সঙ্গে করোনা-সংক্রমণের মিল রয়েছে, তা হলে আপনাকে যেতে হবে সরকারি হাসপাতালে যেখানে আইসোলেশন ওয়ার্ড রয়েছে।

প্রথমে এই ধরনের রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তার পর যদি চিকিৎসকেরা মনে করেন, রোগীর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হবে পরীক্ষার জন্য। সেই লালারসের পরীক্ষার পর করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব না পাওয়া গেলেও চিকিৎসকেরা রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখতে পারেন।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‌‘এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয় রোগী করোনা আক্রান্ত কোনো দেশে সম্প্রতি ভ্রমণ করেছেন কি না বা করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে এসেছেন কি না।”

করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে চলাই ভালো। সে কারণে ২৮ দিন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে রাখাই শ্রেয় মনে করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়লে ২৮ দিন পর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বার লালারস পরীক্ষা করা হবে। দু’টি পরীক্ষাতেই ফল নেগেটিভ পাওয়া গেলে ছেড়ে দেওয়া যাবে সেই রোগীকে।

করোনা আক্রান্ত হিসাবে সন্দেহভাজনদের চারটি আলাদা ভাগে ভাগ করা যেতে পারে-

প্রথম শ্রেণি: যে ব্যক্তির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ রয়েছে এবং সেই উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে তিনি করোনার প্রাদুর্ভাব হয়েছে এমন দেশে ভ্রমণ করেছেন। অথবা, করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে এসেছেন।

দ্বিতীয় শ্রেণি: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সমস্ত উপসর্গ দেখা যাচ্ছে অথচ তিনি করোনা কবলিত কোনও দেশে ১৪ দিনের মধ্যে ভ্রমণ করেননি। অথবা, করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেননি।

তৃতীয় শ্রেণি: কোনও উপসর্গ নেই কিন্তু করোনা আক্রান্ত দেশ বা জায়গা ভ্রমণ করেছেন। অথবা কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন।

চতুর্থ শ্রেণি: কোনও উপসর্গ নেই। করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেননি। কোনও করোনা কবলিত দেশে সম্প্রতি ভ্রমণ করেননি।

নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির সন্দেহভাজনকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। তার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হবে। তাকে যে অ্যাম্বুলেন্সে আনা হবে তার চালক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের পরনে থাকবে পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট এবং মাস্ক।

দ্বিতীয় শ্রেণির সন্দেহভাজনদের তাদের জমায়েত থেকে দূরে থাকতে বলা হবে। চিকিৎসকেরা ফোনে শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেবেন। আশা কর্মীরা খোঁজ রাখবেন ওই ব্যক্তির স্বাস্থ্যের। এ ক্ষেত্রে রোগীকে মাস্ক পরতে হবে। বাড়ির সদস্য এবং আশা কর্মীদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা নিতে হবে।

তৃতীয় শ্রেণির ক্ষেত্রে অবিলম্বে তাকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। স্বাস্থ্য কর্মী এবং চিকিৎসকেরা ফোনে তার শারীরিক অবস্থার উপর নজর রাখবেন। কোনও ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেই ব্যবস্থা নেবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

চতুর্থ শ্রেণির ব্যক্তিদের করোনাভাইরাস মোকাবিলা করার প্রাথমিক পাঠ দেওয়া হবে এবং লোকজনের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হবে।

আনন্দবাজার অবলম্বনে

সংগৃহিত- দেশ রুপান্তর

error: কাজ হবি নানে ভাই। কপি-টপি বন্ধ