নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই করোনা আক্রন্তের রিপোর্ট দেয়াসহ নানা প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত রিজেন্ট গ্রুপ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. সাহেদ করিম ওরফে সাহেদের অবস্থান শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
দেশব্যাপী আলোচিত এই প্রতারককে যে কোন সময় গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র। সম্ভব হলে আজ রাতেই তাকে গ্রেফতার করা হবে বলে ওই সূত্রটি জানিয়েছে।
নানা প্রতারণায় রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের অভিযানের চার দিন পরও মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম গ্রেপ্তার এড়িয়ে ছিলেন। প্রশ্ন ছিলো, তিনি কোথাও ছাড় পাচ্ছেন কি না।
বৃহস্পতিবার গুঞ্জন ছিল মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম সাতক্ষীরার হঠাৎগঞ্জ দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাচ্ছেন। তবে সেসব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য পরিচয় দেয়া সাহেদ যাতে কোনোভাবেই দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য সীমান্তে সতর্কতা জারি করা হয়। বেনাপোল ও শার্শার বিভিন্ন সীমান্তেও সতর্ক ছিল আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এর আগে একইসাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, মো: শাহেদ দেশের ভিতরেই পালিয়ে রয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে প্রতারণা করা রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদ যত বড় ক্ষমতাবানই হোক না কেন, অপরাধ প্রমাণিত হলে ছাড় দেয়া হবে না।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেছিলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মো: শাহেদকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। শাহেদ করিমকে গ্রেফতারের জন্য আমরা সর্বাত্নকভাবে অভিযান পরিচালনা করছি। তাকে ধরার জন্য সারাদেশেই র্যাব সজাগ আছে। সে যেন কোনভাবেই দেশ ত্যাগ করতে না পারে, সেজন্য র্যাব সতর্ক অবস্থায় আছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ জুলাই উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে করোনা পরীক্ষার ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদান ও রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়াসহ ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া যায়।
পরে রিজেন্ট গ্রুপের মূল কার্যালয় এবং রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরে এর দুটি হাসপাতাল সিলগালা করে দেয়া হয়। অভিযানের সময় রিজেন্ট হাসপাতালের পরিচালক ব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তাসহ আট জন কর্মীকে আটক করে র্যাব।
এরপর একে একে হাসপাতালে করোনাভাইরাস টেস্ট ও চিকিৎসার নামে প্রতারণাসহ ৩২টি মামলার আসামি রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদ।
গ্রেফতারকৃতদের সকলেই হাসপাতালটির কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেও মূল অভিযুক্ত মো:শাহেদ এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গিয়েছিলেন। নানা প্রতারণায় রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের অভিযানের চার দিন পরও মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম গ্রেপ্তার এড়াতে পেরেছেন। এনিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।